Type Here to Get Search Results !

ঠাকুরগাঁওয়ে আবারো ক্ষতির মুখে লিচু ব্যবসায়ীরা

মাহমুদ আহসান হাবিব, চিলাহাটি ওয়েব, ঠাকুরগাঁও, উত্তরের কৃষিপ্রধান জেলা ঠাকুরগাঁওয়ের মাটি প্রায় সব রকমের ফল উৎপাদনের জ ন্য উপযোগী। এখানকার আবহাওয়া নাতিশীতোষাণ। মৌসুমী ফল ছাড়াও অন্যান্য ফলও হয় বেশ ভালো । তবে অনাবৃষ্টি ও তীব্র তাপদাহে আবারো ক্ষতির মুখে পড়ছে জেলার লিচু বাগানি ও ব্যবসায়ীরা। গত বছর দফায় দফায় শিলা বৃষ্টির একটা বড় প্রভাব ছিল লিচুর ওপরে। লিচু ঝড়ে পড়ায় স্বপ্ন ভঙ্গন হয়েছিলো বাগান ব্যবসায়ীদের। এ বছর জেলার লিচু বাগান গুলিতে ফলন ভালো এসেছে। গত বছরের ক্ষতি পুষিয়ে লাভের স্বপ্ন দেখেছিল বাগান মালিকগণ ও লিচু ব্যবসায়ীরা। কিন্তু তীব্র তাপদাহের কারণে স্বপ্নের লিচুতে দেখা দিয়েছে তাপের ক্ষত লোকসানের শঙ্কা বাড়াচ্ছে আবারও। সদর উপ জেলার মুন্সিরহাট বাগান বাড়ি, আকচা মুন্সিপাড়া, হরিহরপুর, কালাপাহার,নারগুন কহরপাড়া সহ বেশ কয়েকটি স্থানে বড় বাগান ঘুরে দেখা গেছে লিচুর বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে লিচুর আকৃতি এখনো অনেক ছোট। এরই মধ্যে তীব্র রোদের কারনে অধিকাংশ লিচুর চামড়া পুড়ে গেছে। কিছু লিচুর আকৃতি বড় হতেই সে পোড়া চামড়া ফেটে যাচ্ছে। ফলে এবারেও লিচুতে বিপর্যয় ও লোকসানের শঙ্কা করছেন লিচু চাষী ও বাগান লিজ নেয়া ব্যবসায়ীরা। ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার বাগান ব্যবসায়ী নয়ন জানান,গত বছর শিলা বৃষ্টিতে তার সব লিচু ঝড়ে পড়েছিলো। তিনটি বাগান থেকে প্রায় ১২ লক্ষ টাকা লোকসান হয়েছিল তার। এবছর বাগান গুলোতে ফলন ভালো হয়েছে ।
তবে লিচুর আকৃতি এখনো বড় হয়নি। ঝড়বৃষ্টির কবলে না পড়লেও তীব্র রোদে লিচুর একপাশের চমড়াপু ড়ে গেছে। এখন লিচু যত বড় হচ্ছে লিচু ফেঁটে যাচ্ছে। এ বছর বাগান গুলো থেকে ২০ লক্ষ টাকার লিচু বিক্রি করে ঋণ পরিশোধের স্বপ্ন থাকলেও এখন তিনি প্রায় ৫ থেতে ৭ লক্ষ টাক া লোকসানের শঙ্কা করছেন। আকচা মুন্সিপাড়ার একটা লিচু বাগানে সেচ দিতে দেখা গেল বাগান চাষী খায়রুল ইসলামকে। তিনি জানালেন ,তীব্র রোদের কারনে গাছ পানি পাচ্ছেনা। এদিকে লিচুর চামড়া পুড়ে যাচ্ছে ও ফেটে যাচ্ছে৷ এমন হতে থাকলে ফলন থাকবে ঠিক কিন্তু দাগের কারনে লিচুর দাম পাওয়া যাবেনা। ফলে লোকসান হবে। তাই সেচের মাধ্যমে নিজের স্বপ্ন বাঁচানোর চেষ্টা করছেন তিনি ।
গত কয়েক বছর ধরে লিচুর বাগানে লোকসান গুণছেন অনেক বাগান চাষী তারই মধ্যে একজন আজাদ আলী। এ বছর লিচুর বাগান কেটে ফেলেছেন তিনি। তিনি বলেন, লিচু লাভজনক ফসল হলেও অনেক ঝুঁকি আছে। প্রাকৃতিক প্রতিকূলতা,ফলন ও বাজার সব কিছুর সঙ্গে লড়াই করে এ ব্যবসা করতে হয়। কখনো লোকসান হলে কোন প্রনোনা পাইনি। তাই লিচুর বাগান কেটে অন্য চাষাবাদ শুরু করছি। জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর এ বছর লিচুর আবাদ ও বাগান সংখ্যার হিসাব জানাতে পারেনি। সেই সাথে কি পরিমাণ লিচু তীব্র তাপদাহে ক্ষতি হতে পারে তারও ধারণা দিতে পারেনি । তবে তারা বলছে উৎপাদনের হিসেব থেকে এর সঠিক পরি সংখ্যান জানাতে পারবেন তারা।
এখনো জেলাতে গাছ থেকে লিচু সংগ্রহের কাজ শুরু হয়নি। কিন্তু তারা জানিয়েছেন এখন পর্যন্ত মাঠ পর্যায়ে দেখা যাচ্ছে অনেক বড় বড় বাগান কর্তন করা হয়েছে। তবে কৃষি অফিসের তথ্য অনুযায়ী গত বছরে জেলার ২শ ৫৬ টি বাগানে ৮শ ৫ হেক্টর জমিতে ৫হাজার ৯শ ৯৮ টন লিচু উৎপাদন হয়েছিল।
ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপপরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন,দুই কারনে লিচু ফেটে যেতে পারে। প্রথম কারন সারের ব্যবহার ঠিক মতো না হলে আর অনেকদিন পরে বৃষ্টি হলে। তাছাড়াও এবার রোদে তাপমাত্রাটা অনো বেশি। যে কারনে লিচুর গায়ে দাগ পড়েছে। তবে আমরা চাষীদের নিয়মিত সেচ ও সারের সঠিক ব্যবহার সম্পর্কে পরামর্শ দিচ্ছি।
বিভাগ