মঈনউদ্দিন, সৈয়দপুর : আজ সোমবার (১৪ এপ্রিল) পহেলা বৈশাখ। বাংলা নববর্ষ। বর্ষপঞ্জিতে যুক্ত হলো নতুন আরেকটি বছর।
দেশের সবার হৃদয়ে প্রকৃতি এক অদৃশ্য সুরে বাঁধা। ষড়ঋতুর লীলাভূমিতে ঝড়-বৃষ্টির দামামা বাজিয়ে, ধুলোবালির মেঘ উড়িয়ে, বজ্রের গর্জনে কাঁপিয়ে বৈশাখ এসেছে এক নবজাগরণের প্রতীক হয়ে।
বৈশাখের প্রতীক গাছে গাছে নতুন পাতা আর কৃষ্ণচূড়ার রাঙা ফুলের সাথে সাথে সেজেছে স্কুলের শিক্ষার্থী সহ সব মানুষের ইতিবাচক আগ্রহ।
বৈশাখে কেবল প্রকৃতিই নয়, জেগে ওঠে বাঙালির হৃদয়। বাঙালির জীবনচক্রে প্রকৃতির মেজাজি সন্তান বৈশাখ যেন অনিবার্য। তাইতো এবারের পহেলা বৈশাখও এসেছে ভিন্ন রূপে। এ বৈশাখ শুধু ক্যালেন্ডারের পাতা উল্টে নতুন বছর শুরু করার নয়, এ একটি নতুন সময়ের সূচনা।
আজ দেশের সব মানুষ, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে উদ্যাপন করবে বাংলা নতুন বছর ১৪৩২। পুরোনো সব ব্যর্থতা ভুলে গিয়ে, নতুন আশায় ও সবার মঙ্গল কামনায় জমে উঠবে নববর্ষের উৎসব।
নববর্ষকে স্বাগত জানিয়ে চারদিকে ধ্বনিত হবে- ‘এসো হে বৈশাখ, এসো এসো...
‘বাংলা নববর্ষ ১৪৩২’ জাঁকজমকপূর্ণভাবে উদ্যাপনের লক্ষ্যে দেশব্যাপী নানা কর্মসূচির সাথে সাথে সৈয়দপুরে নেয়া
হয়েছে ব্যাপক কর্মসূচি।
সাংস্কৃতিক সংগঠন সহ অত্র এলাকার বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থী বৈশাখী রুপে সেজে পহেলা বৈশাখের ভোর এলাকার র্যালি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক পদক্ষিন করে মিলিত হয় সৈয়দপুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে।
সেখানে আয়োজন হয়েছে বিভিন্ন সংগঠন ও সরকারি বিভিন্ন সংস্থা দিনব্যাপী বিভিন্ন অনুষ্ঠান, কনসার্ট ও বৈশাখী মেলার আয়োজন করেছে।
স্কুল মাঠ প্রাঙ্গণে বিভিন্ন দেশিয় প্রদর্শনীর স্টল সহ নানা ধরনের রঙ বেরঙের ফুলের বাহার।
ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের মাথায় বৈশাখী রুপে সাজানো মুকুট, গালে রয়েছে রঙে লেখা সুন্দর সুন্দর নানান আকৃতি।
কেহ কেহ দল বেধে সেই রঙ লেখার দায়িত্ব পালন করছেন আর সে সুবাদে সবাই সেখানে ভীড় করছেন তার পছন্দ মত রাঙিয়ে নিতে।
আমরা জানি যে, সংস্কৃতিকে সংজ্ঞায়িত করা কঠিন।
সংস্কৃতির মধ্যে আমাদের আত্মপরিচয় আছে, জীবনাচার আছে, আচার-ব্যবহার আছে, শিল্প-সংস্কৃতি আছে।
আবার আছে আমাদের সংগ্রাম। বাঁচার জন্য মানুষের সংগ্রাম, প্রকৃতির সঙ্গে সংগ্রাম, প্রবৃত্তির সঙ্গে সংগ্রাম। সংস্কৃতিতে রয়েছে সব কিছু।
আমরা বলে থাকি যে, শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড। কিন্তু আসল মেরুদণ্ড হচ্ছে সংস্কৃতি এবং দেখা যাবে যে এটা সভ্যতার চাইতেও সংস্কৃতির গুরুত্ব বেশি এবং স্থায়ী। আমরা সভ্যতার পতন দেখি, কিন্তু সভ্যতার পতনের সঙ্গে সঙ্গে সংস্কৃতি শেষ হয়ে যায় না।
সংস্কৃতির সৃষ্টিগুলো, সংস্কৃতির অর্জনগুলো, সংস্কৃতির মূল্যবোধগুলো রেখে যায় পরবর্তী ইতিহাসের জন্য।
সংস্কৃতি হচ্ছে সব মানুষের মানবতার মুক্তির একমাত্র নিরাপদ প্লাটফর্ম, যেখানে সব মানুষের অংশ গ্রহণ থাকে।
তাই দেশের সংস্কৃতি টিকিয়ে রাখার জন্য আমাদের সব মানুষের হৃদয়ে আনতে হবে ইতিবাচক সাড়া, যার মাধ্যমে দূর হবে ধর্মের নামে অধর্ম উগ্রবাদীদের দৌরাত্ম্য।
দূর হবে মানবতা বিরোধী অপশক্তি। সব মানুষের প্রান চঞ্চল বাড়িয়ে দিতে আমাদের হারিয়ে যাওয়া সকল সংস্কৃতিকে পুনরায় জাগিয়ে তুলতে হবে।
ইনসানিয়াত বিপ্লব বাংলাদেশ এর চেয়ারম্যান আল্লামা ইমাম হায়াত বলেন....
মানবতার রাজনীতি বা রাষ্ট্র বলতে আমরা বুঝি, এমন একটি দুনিয়া যা হবে মানুষের অধিকার স্বাধীনতা ভিত্তিক সার্বজনীন মানবিক, যেখানে সবাই তার অধিকার স্বাধীনতা নিয়ে বাঁচবে বা চলবে কথা বলবে। সবাই যার যার চাহিদা অনুযায়ী সবকিছু পাবে, সবার যার যার সত্য নিয়ে স্বাধীন ভাবে চলবে, কেউ জোর করে তার সত্য অন্যের উপর চাপাবে না।
অর্থাৎ দুনিয়াটা হবে সত্য ন্যায় জ্ঞানের মুক্ত প্রবাহ ভিত্তিক সার্বজনীন মানবিক সাম্যের।
আল্লামা_ইমাম_হায়াত বলেনঃ "মানবিক অস্তিত্বের সুরক্ষা এবং দেশ ও জীবনের কল্যাণে ঐতিহাসিক সুসংবাদ দুনিয়াব্যাপী গোষ্ঠীবাদি অপরাজনীতির সংকট থেকে বিপন্ন মানবতার মুক্তির সুপ্রভাত-
বস্তুর ঊর্ধ্বে জীবনের সংজ্ঞায় মানবসত্তা ও জীবনের সার্বভৌমত্বের ভিত্তিতে মানবতার দর্শন ও একক গোষ্ঠীবাদি স্বৈরতামুক্ত সর্বজনীন মানবতার রাষ্ট্র ও অখন্ড মানবতার অবিভাজ্য বিশ্বব্যবস্থার রাজনৈতিক দিকদর্শন-
খেলাফতে ইনসানিয়াত
মানবিক সাম্যের ভিত্তিতে সর্বজনীন মানবতার রাষ্ট্রের লক্ষ্যে মানবতার রাজনীতির উদয় প্রতিটি মানুষের নিরাপত্তা- অধিকার- মর্যাদায় বিশ্বাসী সকল মানুষের বিজয়, মানবতার বিজয়।
ইনসানিয়াতের দৃষ্টিতে প্রতিটি জীবনই স্বাধীন, মূল্যবান ও সম্মানিত; মানুষ হিসেবে সবার নিরাপত্তা- অধিকার- মর্যাদা- স্বাধীনতা- অলংঘনীয়, জীবনের স্রষ্টা এবং স্রষ্টার আলো ও সৃষ্টির জন্য গুণ- জ্ঞান- কল্যাণের উৎস মহান রেসালাত ছাড়া জীবনের ঊর্ধ্বে কিছু নেই, জীবনের কোন বর্ডার বা গন্ডী নেই, রাষ্ট্র ও দুনিয়া এবং সকল সম্পদ স্রষ্টা প্রদত্ত প্রাকৃতিকভাবেই সবার সব মানুষের- এক গোষ্ঠীর নয়।
ইনসানিয়াতের দৃষ্টিতে দয়াময় স্রষ্টা ও স্রষ্টার রাসুলের প্রদত্ত মালিকানায় প্রতিটি মানুষ তার নিজ জীবন ও সম্পদের মালিক এবং সমগ্র দুনিয়ার মালিক।
রাষ্ট্রীয় নাগরিকত্ব ও বিশ্ব নাগরিকত্ব উভয়ই মৌলিক প্রাকৃতিক অধিকার, যা অস্বীকার জীবন অস্বীকার।
ইনসানিয়াত জীবন বিরোধী ও মানবতা বিধ্বংসী সকল অপশক্তি তথা মিথ্যা- অবিচার- জুলুম- শোষন- রূদ্ধতা- স্বৈরতা থেকে জীবন ও দুনিয়াকে রক্ষার সাধনা। আত্মিক ও রাজনৈতিক তথা জীবনের সকল অধ্যায় নিয়ে এবং ধর্ম- দেশ- জাতি নির্বিশেষে সমগ্র মানবমন্ডলীকে নিয়ে ইনসানিয়াত বিপ্লব।
ইনসানিয়াত বিপ্লবের মূল বিষয় রাজনীতি নয়- জীবননীতি, যেখানে জীবননীতির অপরিহার্য্য অবিচ্ছেদ্য অধ্যায় মানবতার রাজনীতি। মানবতার রাজনীতি ও মানবতার রাষ্ট্র ব্যতীত মানবজীবন মানবতা বিরোধী অপশক্তির গ্রাসে রূদ্ধ ও ধ্বংস হয়ে যায়।
ইনসানিয়াতের ভিত্তিতে দেশ ও দুনিয়া এবং সম্পদ সবার, মানবতা অখন্ড, রাজনীতি-রাজনৈতিক দল ও রাষ্ট্র হতে হবে সর্বজনীন; একক ধর্ম- একক জাতি- একক ভাষা- একক বর্ণ- একক গোত্র- একক শ্রেণি ভিত্তিক নয়একক ধর্ম বা একক জাতীয়তাবাদি রাজনীতি ও রাষ্ট্র ধর্মের মূল্যবোধ বিরোধী এবং মানবতা বিধ্বংসী অন্যায়। সর্বজনীন মানবতার রাজনীতিই সকল মানুষের কল্যাণে একমাত্র রাজনীতি ও একক গোষ্ঠীর স্বৈরতামুক্ত অসাম্প্রদায়িক সর্বজনীন মানবতার রাষ্ট্রই সকল মানুষের কল্যাণে একমাত্র রাষ্ট্রব্যবস্থা।
মানবতাই ধর্মের শিক্ষা; ধর্মের নামে কোন রাষ্ট্র বা একক জাতীয়তাবাদ বা একক বর্নের একক গোষ্ঠীর নামে রাষ্ট্র কখনো সব মানুষের অধিকার স্বাধীনতা রুটি রুজি নিরাপত্তা ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনতে পারবেনা।
অত্র এলাকার শিল্প সাহিত্যে সংসদ নামে এক সাংস্কৃতিক সংগঠন আয়োজন করেন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আর সেই অনুষ্ঠান পরিচালনায় ছিলেন অত্র স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকা।
ছিল উম্মুক্ত গান,কবিতা, নৃত্য, একক অভিনয় সহ নানান আয়োজন।
আর যারা ভালো করেছেন তাদের ছিল পুরস্কার।
সকল পেশার সব ধর্মের সব বর্ণের মানুষের আনাগোনা আর নিত্যনতুন খাবারের দোকান সহ দেশিয় ঐতিহ্য ধরে রাখার মত দোকানিদের নানা সংগ্রহ সবাইকে আনন্দের অনুভূতি প্রকাশ করেছে।