নজরুল ইসলাম, বোদা (পঞ্চগড়) প্রতিনিধি : পঞ্চগড়ের সদর উপজেলায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে আল আমিন (৩৮) নামে এক বাংলাদেশীর মৃত্যু হয়েছে।
শনিবার ভোর রাত তিনটার দিকে উপজেলার অমরখানা ইউনিয়নের ভিতরগড় উত্তর তালমা বস্তি নীলফামারী ৫৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের ভিতরগড় বিওপির দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় সীমান্তের মেইন পিলার ৭৪৪ এর সাব পিলার ৭ হতে আনুমানিক ১৬০ গজ ভারতের অভ্যন্তরে আবালুপাড়া ভাটপাড়া নামক স্থানে এঘটনাটি ঘটে।
নিহত আল আমিনের বাড়ি সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের জিন্নাত পাড়া এলাকায়। তিনি ওই এলাকার সুরুজ আলীর ছেলে।
এদিকে, সীমান্তের শুন্যরেখায় বিজিবি ও বিএসএফের ব্যাটালিয়ন কমান্ড্যান্ট, কমান্ডার পর্যায়ে শনিবার সকাল ১০টা ৫০ মিনিটি থেকে ১১ টা ১৫ পর্যন্ত পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এসময় বিজিবির পক্ষ থেকে হত্যাকান্ডের তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়। বলা হয় পরিস্থিতি যাই হোক সীমান্ত হত্যার মাধ্যমে বিএসএফ মানবাধিকার লঙ্গন করেছে যা অপ্রত্যাশিত এবং কোনভাবেই গ্রহনযোগ্য নয়। ভবিষ্যতে এধরণের ঘটনার পুনরাবৃত্তিরোধে বিএসএফকে সর্বাত্নক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আহবান জানানো হয়। এসময় ভবিষ্যতে এধরণের ঘটনা ঘটবে না বলে বিএসএফ আশ্বস্ত করেন। এ ব্যাপারে ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে কঠোর ভাষায় প্রতিবাদলিপি প্রেরণ করা হয়েছে। একই সাথে মরদেহটি দ্রুত হস্তান্তরের বিষয়ে আলোচনা হয়। শনিবার বিকেলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে নীলফামারী ৫৬ বিজিবি ব্যাটালিয়ন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরো জানানো হয়, আল আমিন সহ ১৫-২০ জন যুবক ভারতীয় সীমান্তে গরু আনতে অনুপ্রবেশ করে। এসময় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের ৪৬ ব্যাটালিয়নের ভাটপাড়া ক্যাম্পের টহলদলে সাথে তাদের ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে। পরে তারা বিএসএফকে দা দিয়ে আঘাতের চেষ্টা করলে বিএসএফ আত্মরক্ষার্থে দুই রাউন্ড গুলি ছোড়ে। এতে ভারতীয় সীমান্তেই আল আমিনের মৃত্যু হয়।
নীলফামারী ৫৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল শেখ মোহাম্মদ বদরুদোজ্জা বলেন, বিজিবি সদর দপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী দায়িত্বপূর্ণ সীমান্তে অবৈধ অনুপ্রবেশ, চোরাচালান ও সীমান্ত হত্যা প্রতিরোধকল্পে বিজিবির টহল কার্যক্রম, গোয়েন্দা তৎপরতা চলমান রয়েছে। এর পাশাপাশি সীমান্তবর্তী জনসাধারণ যাতে অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম না করে, সেজন্য সীমান্তে বিজিবির টহল তৎপরতা জোরদার এবং নীলফামারী ৫৬ বিজিবি ব্যাটালিয়ন স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তি, জনপ্রতিনিধি ও সীমান্তবর্তী জনসাধারণের মধ্যে দৈনিক ভিত্তিতে প্রেষণা ও মতবিনিময় সভার আয়োজন অব্যাহত রয়েছে।
এছাড়া বিজিবি-বিএসএফের উপস্থিতিতে উভয় দেশের পুলিশের মাধ্যমে আইনগত প্রক্রিয়া অনুসরণ করে নিহত বাংলাদেশী নাগরিকের লাশ হস্তান্তর সম্পন্ন শেষে তার পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হবে।