Type Here to Get Search Results !

আগামীকাল ডোমার হানাদার মুক্ত দিবস

ডোমার (নীলফামারী) প্রতিনিধি : আগামীকাল ডোমার হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১সালের এই দিনে ১২ডিসেম্বর পাক হানাদার বাহিনীর হাত থেকে ডোমার উপজেলাকে মুক্ত করে বীর মুক্তিকামী সেনারা। ডোমার উপজেলা থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় হানাদার বাহিনী শহরে ব্যাপক ধংশযজ্ঞ চালায়। হানাদার বাহিনীর সাথে তাদের দোসররা শহরের দোকান পাটে লুটপাট চালায়। পাশাপাশি ডোমার উপজেলার সাথে ডিমলা ও জলঢাকা উপজেলার যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম বোড়াগাড়ী ব্রীজটি আর্টিলারি সেল নিক্ষেপ করে ভেঙে দেয়া হয়। ফলে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।
১১ডিসেম্বর সন্ধায় বোড়াগাড়ী ভাটিয়া পাড়া এলাকায় মসজিদে আযান দেয়ার সময় হানাদার বাহিনীর গুলিতে নিহত হন এক ব্যাক্তি। ওই রাতে ডোমার থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় কয়েকজন ঘুমিয়ে থাকা পাক সেনা দল থেকে ছাড়া পড়েন। পরদিন এলাকার লোকজন তাদের ধরে গলায় জুতার মালা পড়িয়ে সোনারায় এবং ডোমারের বিভিন্ন এলাকা ঘুড়িয়ে সৈয়দপুর ক্যান্টনম্যান্টে সোপর্দ করেন।
১২ডিসেম্বর ডোমার হানাদার মুক্ত হলে উল্লাসে আত্মহারা হয়ে পড়ে সবাই। দলে দলে মুক্তিযোদ্ধা ও স্বাধীনতাকামী জনতা স্থানীয় ডাক বাংলো মাঠে জড়ো হতে শুরু করে। সেখানে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করে ক্যাপ্টেন ইকবালের নেতৃত্বে একটি আনন্দ বিজয় মিছিল শহরে প্রবেশ করে। বোড়াগাড়ী ব্রীজ এলাকার বাসিন্দা অনেকে জানান, আমরা ঘুমিয়ে ছিলাম হঠাৎ রাতে বিকট শব্দে আমাদের ঘুম ভেঙে যায়। পরদিন দেখতে পাই ব্রিজটি বোমা মেরে উড়িয়ে দেয়া হয়েছে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রউফ ববিন জানান, আমাকে ভারতের কোটগজ থেকে লালমনিরহাটের বুড়িমারী পাটগ্রাম ফকিরপাড়ায় ভারতীয় আর্মিদের কোম্পানির সাথে বদলি করা হয়। সেখানে যুদ্ধ কালীন সময়ে অবস্থান করা কালীন ভারতের সেখানকার ওয়ার্লেস অপারেটরের কাছে জানতে পারি ১১ডিসেম্বর ডোমার হানাদার মুক্ত হয়। ডোমারে এসে জানতে পারি ১২ডিসেম্বর পতাকা উত্তোলন ও বিজয় মিছিল হয়। ১৩ডিসেম্বর নীলফামারী হানাদার মুক্ত হয়।
ডোমার মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সাবেক কমান্ডার আব্দুল জব্বার জানান, আমি তখন দিনাজপুর চালহাটি ক্যাম্পে ছিলাম। দেশ স্বাধীনের পর ডোমারে ছুটে আসি। এসে আমার অনেক মুক্তিযোদ্ধা এবং এলাকার লোকজনদের কাছে জানতে পারি ১২ডিসেম্বর ডোমার হানাদার মুক্ত হয় এবং সেদিন ক্যাপ্টেন ইকবালের নেতৃত্বে স্বাধীন দেশের পতাকা উত্তোলন ও একটি বিজয় মিছিল করে। কতিপয় ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা হানাদার মুক্ত দিবসটি ভুলভাবে প্রতিষ্ঠা করে ইতিহাস বিকৃত করতে গিয়ে ব্যার্থ হয়। আগামী প্রজন্ম যাতে সঠিক ইতিহাস জানতে পারে সে বিষয়ে সকলের সহযোগীতা দাবি করেন।
বিভাগ