আপেল বসুনীয়া, চিলাহাটি ওয়েব : নীলফামারী জেলার চিলাহাটির বিভিন্ন এলাকা থেকে দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে প্রাকৃতিক ভাবে তুলা আহরণের একমাত্র অবলম্বন শিমূল গাছ।
বিগত এক-দেড় যুগ আগেও এ অঞ্চলের অধিকাংশ বাড়ির আনাচে কানাচে আর রাস্তার ঢালে প্রচুর শিমুল গাছ দেখা যেত। বিশেষ করে মাঘ ফাল্গুন মাসে শিমুল গাছে লাল কিংবা গোলাপী রংয়ের নয়নাভিরাম ফুলই জানান দিত কোন এলাকায় শিমুল গাছ আছে। গাছে গাছে প্রস্ফুটিত এই শিমুল ফুলই স্মরণ করিয়ে দিত বসন্ত এসে গেছে। কিন্ত সেই বৃহৎ গাছের দৃশ্য এখন আর তেমন চোখে পড়েনা।
বলা যায়, কালের আবর্তে হারিয়ে যাচ্ছে শিমুল গাছ। রক্তচূড়া গাছকে যদি ফুলের মধ্যে গণ্য করা হয়, তাহলে শিমূল গাছকেও তার সাথে তালিকাভূক্ত করতে হবে বৈকি!
প্রাকৃতিক ভাবে তুলা উৎপাদনের এই গাছটিকে বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন নামে পরিচিত হলেও মান্দার গাছ বলে সর্বাধিক খ্যাত।
কথায় বলে- মান্দার গাছ শত বছরের হলেও সাড়ি হয়না। যদিও কথাটি বয়স্ক লোকের কম বুদ্ধির কর্মকান্ডের দরুণ বলা হয়ে থাকে। এই গাছের ফুল ও ফল নিয়ে সাহিত্য-কাব্য রচিত হয়েছে। এর শিকড় বাকল ওষুধ হিসেবে প্রাচীন কাল থেকেই ব্যবহার হয়ে আসছে।
বর্তমানে শিমুলের কাঠ বা তক্তা দিয়ে বিল্ডিংয়ের ছাদে সাটারিং দেওয়ার কাজ করা হচ্ছে। আর হার্ডবোর্ড তৈরির মূল কাঁচামালও এই শিমূল গাছ। কিন্ত দিনদিন এই গাছটি হারিয়ে গেলেও সরকারি ভাবে এর রোপণের জন্য কোন উদ্যোগ নিতে দেখা যাচ্ছেনা।
সাংবাদিক রবিউল ইসলাম চিলাহাটি ওয়েব ডটকমকে জানান- এক সময় বসত বাড়ি ছাড়াও চিলাহাটির বিভিন্ন সড়কের পাশে প্রচুর শিমূল গাছ চোখে পড়তো, কাঁটাযুক্ত বিশাল বিশাল গাছের ছায়ায় পথিক বিশ্রাম নিত।
দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে শিমূল গাছ। এতে এক দিকে মানুষ তাদের লেপ, তোষক আর বালিশ তৈরির প্রধান উপকরণ মানসম্মত তুলা পাচ্ছেনা। তুলার জন্য গার্মেন্টের ঝুট তুলার প্রতি নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে সবাই।
অপর দিকে শিমুল গাছ বিলুপ্তির জন্য প্রকৃতিও হারাচ্ছে তার ভারসাম্য। এই গাছ বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষার জন্য এখনই উদ্যোগ নেওয়া দরকার।