Type Here to Get Search Results !

গাইবান্ধায় ভুল অস্ত্রোপচারের ৯ দিন পর প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ

ডা. একরাম হোসেন জেনারেল হাসপাতাল
ছাদেকুল ইসলাম রুবেল,গাইবান্ধা : গাইবান্ধায় ভুল সিজারিয়ান অপারেশনে বিপাশা আক্তার (২৮) নামে এক প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। স্বজনদের অভিযোগ, জেলা শহরের কলেজ রোডে অবস্থিত ডা. একরাম হোসেন জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসায় ৯ দিন পর মারা গেছেন বিপাশা আক্তার।
শুক্রবার (৩১ আগস্ট) ভোররাতে রংপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালের আইসিইউ বিভাগে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ওই নারী। এর আগে গত ২৩ আগস্ট রাতে ডা. একরাম হোসেন জেনারেল হাসপাতালে বিপাশা আক্তারের দ্বিতীয় অস্ত্রোপচার করা হয়। সেখানে একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেন তিনি। কিন্তু অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে রাতেই তড়িঘড়ি করে তাকে রংপুরের ডক্টরস ক্লিনিকে রেফার করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এরপর থেকেই দীর্ঘ ৯ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছিলেন বিপাশা। তবে নবাজাতক শিশুটি সুস্থ রয়েছে।
নিহত বিপাশা আক্তার গাইবান্ধা সদর উপজেলার পশ্চিম রাধাকৃষ্ণপুর গ্রামের আব্দুল বাকি শেখের মেয়ে এবং শহরের পূর্বপাড়ার ব্যবসায়ী আপনের স্ত্রী।
স্বজনরা জানান, অস্ত্রোপচারের পর প্রচণ্ড বেগে বিপাশার রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। দীর্ঘ চার ঘণ্টা রক্তক্ষরণের পরও রক্ত বন্ধে ব্যর্থ চেষ্টা চালায় গাইবান্ধা ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ। পরে সফল না হতে পেরে ওই দিনই রাত ১টার দিকে স্বজনদের মাঝে আতঙ্ক সৃষ্টি করে দ্রুত পরদিন আরও একটি অস্ত্রোপচারে বিপাশার জরায়ু কেটে ফেলা হয়। কিন্তু ততক্ষণে রোগীর অবস্থার আরও অবনতি হলে আইসিইউতে নেওয়া হয়। সেখানে অবস্থা আরও সংকটাপন্ন হলে দুই দিন পর রংপুরের অপর একটি বেসরকারি চিকিৎসা কেন্দ্র-গুড হেলথ নামক হাসপাতালে রেফার করা হয়। সেখানে ভর্তি নিয়েই তারা বিপাশাকে আইসিইউ বিভাগে চিকিৎসা শুরু করেন।
স্বজনদের অভিযোগ, ডা. একরাম হোসেন জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের চরম অবহেলা ও চিকিৎসকের ভুল অপারেশনের কারণে মৃত্যু হয়েছে বিপাশার। তারা অবিলম্বে দায়ী চিকিৎসকসহ সংশ্লিষ্টদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নেওয়া, একইসঙ্গে ক্লিনিক বন্ধ করে দেওয়ার দাবি জানান।
এসব বিষয়ে ডা. একরাম হোসেন জেনারেল হাসপাতালের ম্যানেজার কাঞ্চন বলেন, স্যার (হাসপাতালের মালিক ডা.একরামুল) আমেরিকায় আছেন। আমরা ওই রোগীর চিকিৎসার জন্য এ পর্যন্ত ৭৮ হাজার টাকা দিয়েছি। আপনারা ডা. সেকেন্দারের সঙ্গে কথা বলেন বলে ফোন কেটে দেন তিনি।
বিপাশার সিজারিয়ান অপারেশনের আ্যানেস্থেসিয়া চিকিৎসক ডা. সেকেন্দার আলী বলেন, ওই রোগীর সিজারিয়ান অপারেশন করেছে ডা.আব্দুর রহিম। অপারশনের পর রোগীর রক্তক্ষরণ বন্ধ হচ্ছিল না। পরে রোগীকে রংপুরের কমিউনিটি মেডিক্যালে রেফার করা হয়। সেখানেও রক্ত বন্ধ না হওয়ায় তার জরায়ু কেটে ফেলা হয়।
উল্লেখ্য, ডা. একরাম হোসেন জেনারেল হাসপাতালটি গাইবান্ধা ক্লিনিক নামে প্রতিষ্ঠিত হয়। কিন্তু সম্প্রতি হঠাৎ করেই গাইবান্ধা ক্লিনিকের নাম বদলে সাইনবোর্ড লাগানো হয় ডা. একরাম হোসেন জেনারেল হাসপাতাল।
বিভাগ