Type Here to Get Search Results !

বদরগঞ্জে মামুন বেকারির পণ্য এখন জনপ্রিয়তার শীর্ষে

আকাশ রহমান, বদরগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধি, চিলাহাটি ওয়েব : দেশে জনসংখ্যা বাড়ার সাথে সাথে দৈন্যদিন বেড়ে চলেছে বেকারি পণ্য সামগ্রীর চাহিদা। মানুষের এই চাহিদা পুরনে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস এন্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) অনুমোদিত খাদ্য প্রস্তুতকারী বেকারিগুলো নিত্য নতুন আইটেম খাদ্য সামগ্রী তৈরি করে জনগনের চাহিদা পুরনের আপ্রাণ চেষ্টা করছে।
তাই গত কয়েক বছরে দেশের কেন্দ্র বিন্দু রাজধানী ঢাকা থেকে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ অনুমোদিত অসংখ্যা বেকারির পণ্য এখন ছড়িয়ে পড়েছে টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া পর্যন্ত।
এছাড়াও দেশের রাজধানীর বাইরে বৃহত্তর রংপুর অঞ্চলে বেকারিজ পণ্য সামগ্রীর চাহিদা অনুযায়ী স্বাস্থ্যকর পরিবেশে ভেজালমুক্ত খাদ্যদ্রব্য তৈরিতে সবার শীর্ষে রয়েছে বদরগঞ্জ পৌর শহরের ঐতিহ্যবাহী মামুন বেকারি।
তারা তাদের লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য অটুট রেখে নির্ভেজাল খাদ্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে জনপ্রিয়তায় এগিয়ে রয়েছে উত্তরাঞ্চলের শীর্ষস্থানে। বদরগঞ্জ পৌর শহরের প্রাণকেন্দ্র হাসপাতাল রোডে অবস্থিত এই প্রতিষ্ঠানের খাদ্য সামগ্রী বর্তমানে উত্তরাঞ্চলের বেশ কয়েকটি জেলায় অনায়াসে বিক্রি হওয়ার রেকর্ড রয়েছে। তাদের উতপাদিত খাবার গুণে ও মানে অতুলনীয় হওয়ায় ক্রেতা সাধরন মামুন বেকারি নাম শুনেই চোখ বুজে তাদের পণ্য ক্রয় করে থাকে।
গত এক যুগ সময় ধরে সাধারন মানুষের জরিপে রংপুর অঞ্চলে সবার শীর্ষে রয়েছে বদরগঞ্জের স্বনামধন্য এই মামুন ব্রেড এন্ড বিস্কুট ফ্যাক্টরী। বেকারি বলতে যা বুঝায়, বেকারি এমন একটি প্রতিষ্ঠান যা ওভেনে তৈরি ময়দা ভিত্তিক বেকড পণ্য যেমন রুটি, কুকিজ, কেক, বিস্কুট, ডোনাট, ব্যাগেল, পেস্ট্রি ও বিভিন্ন ধরনের পাই তৈরি করে এবং বিক্রি করে থাকে। কিছু খুচরা বেকারিকে ক্যাফে হিসাবেও শেণিবদ্ধ করা হয়। যার প্রাঙ্গনে বেকড পণ্য খেতে ইচ্ছুক গ্রাহকদের মাঝে পণ্য সামগ্রী বিক্রি করা হয়।
এদিকে আজ সোমবার মামুন ব্রেড এন্ড বিস্কুট ফ্যাক্টরী কর্তৃপক্ষ সাংবাদিকদের জানান, আমাদের লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য শুধু ব্যবসা বাণিজ্য করে প্রতিষ্ঠিত হওয়া নয়, আমাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে বেকারি ফ্যাক্টরীর মাধ্যমে এ্ই এলাকার হাজার হাজার বেকার মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে মানব সেবায় সামিল হওয়া।
বর্তমানে আমাদের এই ক্ষুদ্র কারখানায় প্রায় দেড় শতাধিক কর্মচারী বেকারিজ পণ্য সামগ্রী তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করছে।
এছাড়াও হাজার হাজার মানুষ জীবিকার তাগিদে আমাদের তৈরি পণ্য সামগ্রী বাজারে বিক্রি করছে। প্রতিদিন আমাদের ১৫-১৬টি ছোট বড় পরিবহন/গাড়ি সরাসরি ফ্যক্টরী থেকে প্যাকেটজাত খাদ্যদ্রব্য নিয়ে জনগণের দ্বারপ্রান্তে পৌছে দিয়ে থাকে। আমাদের তৈরি মালামালের গুণগত মান, সঠিক ওজন, প্যাকেটের গায়ে উতপাদন এবং মেয়াদউত্তীর্ণের তারিখ উল্লেখ্য থাকায় প্রতারিত হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই। কিন্তু বর্তমান বাজারে বেকারিজ সরঞ্জাম চিনি, ময়দা, ভোজ্য তেল ইত্যাদির মুল্য বৃদ্ধি হওয়ায় খাদ্যদ্রব্য তৈরি অনেকটা কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাই প্রতিটি হাট বাজারে আগের মত যথা সময়ে পণ্য সামগ্রী পৌছে দেওয়া সম্ভব হচ্ছেনা।
তারা আরো বলেন, দেশের প্রচলিত বেকারি ফ্যাক্টরীর নিয়মনীতি ও বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের নির্দেশনাবলী মেনেই আমরা শুরু থেকে অদ্যবধি নির্ভেজাল খাদ্য সামগ্রী তৈরি আসছি। আমাদের ফ্যাক্টরীর বিষয়ে জেলা এবং উপজেলা স্যানিটারি কর্মকর্তা অবগত আছেন।
অপরদিকে এই মামুন বেকারিা গত কয়েক বছর ধরে নিত্য নতুন আইটেম পণ্য সামগ্রী তৈরি করে তা বাজারজাত করে আসছে। সেইসাথে তারা মালামালের গুণগত মান ও পণ্যের সঠিক ওজন বজায় রেখে খাদ্যদ্রব্যের মাঝে নিয়ে এসেছে ভিন্ন স্বাদ ও ভিন্ন এক আমেজ।
অবস্থার দৃষ্টে মনে হয়, মামুন বেকারির কারিগরদের হাতে যেন যাদু আছে! তাদের তৈরি খাদ্যদ্রব্য অনেকের কাছে যেন অমৃত!! এবিষয়ে উপজেলার ট্যাক্সেরহাট বাজারের নাহার বেকারির মালিক মো. জয়নাল আবেদীন বলেন, মামুন বেকারির পন্য সামগ্রী মানেই দোকানে পড়ে যায় বেচা-বিক্রির ধুম। তাদের পণ্যের নাম শুনলেই ক্রেতারা চোখ বুঝে ক্রয় করে থাকে। তাই আমি প্রায় ১১আইটেম মালামাল বিক্রি করে থাকি।
লোহানীপাড়া মন্ডলের হাটের মুদি দোকানদার মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, মামুন বেকারির তৈরি খাদ্যদ্রব্য মানেই আপোষহীন এবং অতুলনীয় একটি পণ্য। তাদের মালামাল দোকানে রাখলে মেয়াদউত্তীর্ণ হওয়ার আগেই তা বিক্রি হয়। সেখানে অন্যান্য কোম্পানীর পণ্য অবিক্রিত অবস্থায় পড়ে থাকতে থাকতে ডেট পার হয়।
তারাগঞ্জ উপজেলার বুড়িহাট বাজারের মুদি ব্যবসায়ী মজিবর রহমান বলেন, এই অঞ্চলে মামুনের রুটি বিস্কুট, কেক, টোস্ট ইত্যাদি পণ্য বিক্রি হতে সময় লাগেনা। কিন্তু তারা আমাদেরকে প্রয়োজনের তুলনায় মালামাল দিতে পারেনা।
দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার মধ্যপাড়া বাজারের আইয়ুব আলী, নবাবগঞ্জ উপজেলার কুশদহ ইউনিয়নের নাককাটির বাজারের আসাদুল হক, রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার ছড়ান বাজারের আব্দুর রশিদ, রংপুর সদর উপজেলার মমিনপুর বাজারের বেবারিজ পণ্য বিক্রেতা ও বেকারির ডিলার আইয়ুব আলী জানান, বদরগঞ্জের মামুন বেবারি দীর্ঘ সময় ধরে লাখো মানুষের বিশ্বস্থতার অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। তাই জনগন চোখ বুঝেই তাদের বেকারির পণ্য সামগ্রী ক্রয় করে থাকে। আমরাও গর্ব করে বলতে পারি মামুন বেকারির মালামাল বিক্রি করতে কোন এ্যাডভেটেজ করতে হয় না। আমাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে তাদের তৈরি প্রায় সকল প্রকার পণ্য আমরা বিক্রি করে থাকি। গুণেও মানে সেরা এবং প্যাকেটের ভিতর পণ্যের ওজনেও সঠিক থাকায় তাদের পণ্য বিক্রি করতে আমাদেরকে বেগ পেতে হয়না।
মানসম্মত. নির্ভেজাল পণ্য সামগ্রী প্রস্তুকরন এবং বাজারজাত করার জন্য বদরগঞ্জের স্বনামধন্য মামুন বেকারি সত্যি পুরুস্কার পাওয়ার দাবিদার।
বদরগঞ্জ উপজেলা স্যানিটারি কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, এখনকার মামুন বেকারির বেশ সুনাম রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আমাদের কাছে কোন অভিযোগ নেই।
বিভাগ