আকাশ রহমান, বদরগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধি, চিলাহাটি ওয়েব : রংপুরের বদরগঞ্জে পাউবোর ক্যানেল নির্মাণকালে সাধারন মানুষের অর্ধকোটি টাকার সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে মর্মে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার পর গতকাল শুক্রবার উপজেলার মধুপুর ইউনিয়নের কাজীরহাট এলাকার শতশত মানুষ ক্ষতিপুরনের দাবীতে ক্যানেল নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়।
সরেজমিনে গেলে ভুক্তভোগীরা জানান, গত ৪মাস পুর্বে রংপুর সদর উপজেলার মমিনপুর থেকে বদরগঞ্জ উপজেলার মধুপুর ইউনিয়নে উপিনের ডাঙ্গা পর্যন্ত পাউবোর একটি ক্যানেল নির্মাণের কাজ শুরু হয়। এই নির্মাণ কাজ চলাকালে চলতি সপ্তাহে মধুপুর ইউনিয়নের কাজীহাট এলাকার শতশত মানুষের বাড়ীঘর ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি সাধন হয়েছে।
এমনকি ঠিকাদারের লোকজন কাজীহাট বাজারে অবস্থিত মধুপুর কাজীরহাট সালেহিয়া মাদরাসার দোকানপাট সহ কমপক্ষে ৭-৮টি দোকানঘর ও ক্যানেলের সীমানার অদুরে অবস্থিত মোজাহিদ আলী নামে এক ব্যক্তির পাকাঘর, স্থাপনা বুলডোজার দিয়ে ভেঙ্গে দেয়।
এবিষয়ে ভুক্তভোগী মোজাহিদ আলী সাংবাদিকদের বলেন- পাউবোর ক্যানেল নির্মাণ কাজের ঠিকাদার ইতিপুর্বে অন্যায়ভাবে আমার মাছ ভর্তি পুকুর থেকে মাটি উত্তোলন করে ক্যানেলের পাড় বাঁধার কাজ করছে। এছাড়াও গত বুধবার আমি বাড়ীতে না থাকার সুবাধে পাউবোর দালাল এই এলাকার আফজাল হোসেন, মানিক মিয়া, রঞ্জু মিয়া, কালা বাগ, হযরত আলীসহ এই কাজের সাথে সম্পৃক্ত ব্যক্তিরা আমার পাকাঘর স্থাপনা ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিয়েছে।
এতে করে আমার পুকুরের মাছ সহ প্রায় ২লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আমি ক্যানেল নির্মাণকারী ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কাছে আমার যথযথ ক্ষতিপুরন চাই।
এদিকে একই এলাকার আব্দুল হাকিম, স্বাধীন মিয়া, আবু সায়েম, রঞ্জিত কুমার, সামছুল হক, মোনায়েম সরকার জানান, জনগনের সুবিধার জন্য ক্যানেল নির্মাণ করতে গিয়ে ঠিকাদারের লোকজন উপকারের চেয়ে ক্ষতিই বেশি করেছে। ক্যানেল নির্মানে পর্যাপ্ত জায়গা থাকা সত্ত্বেও তারা সাধারন মানুষের বাড়ীঘর ও দোকানপাট ভেঙ্গে দিয়ে ক্যানেল নির্মাণ করছে। এমনকি তাদের হাত থেকে এই অঞ্চলের একমাত্র মাদরাসাটিও রক্ষা পায়নি। অপরদিকে একই এলাকার আনছার আলী, রমজান আলী সহ আরো অনেকে বলেন, প্রায় ৪কিলোমিটার ক্যানেল নির্মাণ করতে তারা কৃষকের প্রায় বিশ বিঘা জমির আমন ফসলের ক্ষতিসাধন করেছে। যার ফসলের বাজার মুল্য প্রায় ১০লাখ টাকা। আমরা এই ক্ষতিপুরন চাইতে গেলে এলাকার কতিপয় দালাল চক্রসহ ঠিকারের লোকজন আমাদেরকে মামলার ভয়ভীতি দেখায়। অভিযাগকারীরা আরো বলেন, ক্যানেল নির্মাণকারী ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান আমাদের ক্ষতিপুরন না দিলে আমরা এলাকাবাসী ক্যানেল নির্মাণের বাকি কাজটুকু করতে দিব না।
তছলিম মিয়া নামে অপর এক ব্যক্তি বলেন, দুই সপ্তাহ পুর্বে আমি ওই ক্যানেলে দিনমজুরের কাজ করেছি। ওই সময় আমার প্রাপ্য দিন হাজিরার সাড়ে ৪শত টাকা চাইতে গেলে ঠিকাদারের দালাল আফজাল হোসেন আমাকে টাকা না দিয়ে উল্টো আমার নামে থানায় একটি চাঁদাবাজীর অভিযোগ দায়ের করেছে। কার কাছে চাইবো আমার বিচার?
অপরদিকে, মো. মেহেদী হাসান নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দপুর পওর বিভাগ, বাপাউবো, সৈয়দপুর নীলফামারী, মোবাইল ফোনে বলেন, সেখানে ক্যানেল নির্মাণ করতে গিয়ে সাধারণ মানুষের বাড়ীঘর, দোকানপাট ও ফসলের ক্ষয়ক্ষতি হলে বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু পাউবোর জায়গায় ক্যানেলের দুই ধারে অবৈধ দখলদারদের কোন ক্ষয়ক্ষতি হলে এতে আমাদের কিছু করার নেই।