এস.এম.রকি, খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধি : পরিত্যক্ত জমিতে বাণিজ্যিকভাবে পেঁপে চাষ করে সাফল্য পেয়েছেন দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার ৪ নং খামারপাড়া ইউনয়নের ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের কৃষক আলতাফ হোসেন। স্মার্ট এই কৃষক ঐ এলাকার বলরাম বাজার থেকে জমিদারনগর যাওয়ার রাস্তার ধারে ও পুকুর পাড়ে আধা কিলোমিটার রাস্তায় পেঁপে গাছ লাগিয়েছেন তিনি। এ গাছ লাগাতে তার খরচ হয়েছে ৫০ হাজার টাকা। এই পেঁপে গাছ থেকে অর্জিত অর্থ থেকে তাঁর ভাগ্য বদল হয়েছে।
কৃষক আলতাফ হোসেনের ব্যতিক্রমী এই উদ্যোগ দেখতে প্রায়ই অনেকে পরিদর্শন করে পেঁপে গাছ লাগানোর জন্য আগ্রহী হয়েছেন।
শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, বলরাম বাজার থেকে জমিদারনগর যাওয়ার রাস্তার এক ধারে, পুকুর পাড় ও পরিত্যক্ত জমিতে সারিবদ্ধ ভাবে পেঁপে গাছ লাগানো। পেঁপে গাছ পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক আলতাফ। এতে রাসায়নিক সারের পরিবর্তে তাঁর নিজ খামার থেকে তৈরীকৃত জৈবসার ব্যবহার করছেন কৃষক আলতাফ।
সরেজমিনে জানা যায়- কৃষক আলতাফ হোসেন ঐ এলাকার গুলজার রহমানের ছেলে। ইউটিউবে পেঁপে চাষ বিষয়ে জানতে পেরে তাঁর আগ্রহ শুরু হয় পেঁপে চাষ করার। পরবর্তী সময়ে উপজেলা কৃষি বিভাগের পরামর্শে বগুড়া থেকে থাইল্যান্ডের গ্রিন লেডি জাতের ৪০০ পেঁপে চারা এনে রোপণ করেন। তবে সয়মের সাথে গাছের সংখ্যা এখন প্রায় আড়াইশোর মত। প্রতি বছর এপ্রিল থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত মাসে প্রায় ৩ বার ১০-১৫ মণ করে পেঁপে বিক্রি করেন। প্রতি কেজি পেঁপের বাজারমূল্য ১৫-২০ টাকা। তবে বর্ষাকালে পেঁপের চাহিদা বেশী থাকায় প্রতি কেজি পেঁপের মূল্য ৫০-৬০ টাকা দরে বিক্রি করা হয়।
এবিষয়ে কৃষক আলতাফ হোসেন বলেন, "ছোটবেলা থেকেই কৃষির প্রতি বাড়তি আগ্রহ থেকে চাষাবাদের সাথে সম্পৃক্ত। ইউটিউব ও কৃষি অফিসারের পরামর্শে পরিত্যক্ত জমিতে অল্প পুঁজিতে লাভের আশায় পেঁপে চাষ শুরু করি। গত মৌসুমে প্রায় ৩ লক্ষ টাকার পেঁপে বিক্রি করি এবং চলতি মৌসুমে এখন পর্যন্ত দেড় লক্ষ টাকার পেঁপে বিক্রি করেছি। তিনি আরো বলেন, সকল নাগরিক যদি পরিত্যক্ত জমিতে চাষাবাদ করে তাহলে সবজী চাহিদা পূরণের সাথে আর্থিক ভাবেও লাভবান হওয়া যাবে। আগামীতে আরো ব্যাপক পরিসরে তিনি পরিত্যক্ত জমি ব্যবহার উপযোগী করবেন বলে জানান।
ব্যতিক্রমী এই কাজের প্রশংসা করে খামারপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান আবু বকর সিদ্দিক চৌধুরী বলেন, ‘আলতাফ হোসেন একজন ভালো কৃষক। কৃষকদের এমন কাজ নি:সন্দেহে প্রশংসনীয়। তিনি পরিত্যক্ত জমি ব্যবহার উপযোগী করে পেঁপে চাষ করছেন। যেটি অন্যদের জন্য অনুকরণীয় ও ইতিবাচক একটি কাজ।
এবিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ইয়াসমিন আক্তার বলেন, ‘আলতাফ হোসেন গত বছরের শুরুতে কৃষি বিভাগের পরামর্শে গ্রিন লেডি জাতের পেঁপের চারা লাগিয়েছিলেন । এতে ভালো ফলন ও আর্থিক ভাবে লাভবান হয়েছেন। এমন ব্যতিক্রমী যেকোনো চাষাবাদ বৃদ্ধি করতে কৃষি বিভাগ নিয়মিত কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করছে যেন কোন জমি পরিত্যক্ত বা অনাবাদি হয়ে পড়ে না থাকে।