সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি : মাদার পদ্ধতিতে প্রতি বছর নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার প্রত্যেক গ্রামে বাড়ছে করলার চাষ। স্বল্প ব্যয় ও লাভ বেশী হওয়ায় করলা চাষে আগ্রহ বাড়ছে চাষিদের। তিক্ত হলেও এ সবজি খেতে পছন্দ সবারই। বিশেষ করে করলা খেতে বেশী পছন্দ করে নারীরা।
করলা বাংলাদেশের অন্যতম একটি প্রধান সবজি। এটি স্বাদে তিক্ত হলেও দেশের সকলের নিকট একটি প্রিয় সবজি হিসেবে পরিচিত।
নীলফামারী কৃষি অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক (শস্য) মোঃ জাকির হোসেন জানান, করলা চাষ প্রায় সব মাটিতেই হয়ে থাকে। তবে জৈব পদার্থ সমৃদ্ধ দো - আঁশ ও বেলে দো- আঁশ মাটিতে চাষ করলে ফলন ভাল পাওয়া যায়।
তিনি বলেন প্রতি বছর নীলফামারী জেলায় করলার চাষ বাড়ছে। তবে জেলার সৈয়দপুর, ডিমলা ও কিশোরগঞ্জ উপজেলায় করলার চাষ বেশী হয়ে থাকে।
সৈয়দপুর উপজেলার পোড়ারহাট এলাকার করলা চাষি হাসান আলী জানান,রোপনের পর এ সবজির স্থায়িত্বকাল থাকে ৪ থেকে ৫ মাস। চারা রোপনের ৪৫ থেকে ৬০ দিনের মধ্যে প্রথম ফল তোলা যায়। গাছ প্রতি ফল ধরে ২৫ থেকে ৩০টি করে। কোন কোন গাছে আবার কম ও বেশীও হতে পারে। হেক্টর প্রতি ফলন হয়ে থাকে ২৫ থেকে ৩০ টন পর্যন্ত।
সৈয়দপুর উপজেলা
কৃষি কর্মকর্তা ধীমান ভুষন বলেন, করলা সবজি সাধারণত ফেব্রুয়ারি থেকে মে মাসের মধ্যে রোপন করতে হয়। এ সময় তাপমাত্রা বেশী থাকার কারণে গাছ দ্রুত বাড়ে। তবে এখন করলার চাষ প্রায় সারা বছরই হয়ে থাকে।
সদর উপজেলার রবিউল ইসলাম জানান,তিনি প্রতি বছর করলার চাষ করেন। এ বছর তিনি ২৫ শতক জমিতে করলার চাষ করেছেন। এতে তার সব মিলিয়ে ব্যয় হয়েছে ১৫ হাজার টাকা। বর্তমানে তিনি ১৫ দিন পর পর জমি থেকে ফল তুলছেন। পনের দিন পর পর তিনি ২০ মন করে করলা তুলছেন।
তিনি বলেন, বাজারে প্রথমে করলার দাম অনেক বেশী ছিল। কিন্তু তিনি প্রথম বাজার ধরতে পারেননি। কারণ ওই সময় গাছে ফল ধরেনি। এখন বাজারে করলার দাম কমে গেছে। তারপরও তিনি ওই জমি থেকে প্রায় লাখ টাকার করলা বিক্রি করতে পারবেন এমন আশা করছেন। তবে প্রথম ধাপেই তিনি ৩২ হাজার টাকার করলা বিক্রি করেছেন। এখনো তিনি ফল তুলতে পারবেন ৬ বার। সে হিসেবে তিনি এক লাখেরও বেশী টাকা করলা বিক্রি করে আয় করবেন।
সৈয়দপুর বাজারে করলা ক্রয় করতে এসে নুরুল ইসলাম নামে একজন জানান, আমরা নীলফামারীর মানুষ করলার ভাজি খাই। গাইবান্ধা ও নওগাঁর মানুষ করলার ঝোল খায়। তিক্তা হলেও এ সবজি খেতে মজা লাগে।
সৈয়দপুর ১শ শয্যা হাসপাতালের চিকিৎস্যক ডাঃ আবদুর রহিম জানান,১০০ গ্রাম ভক্ষণ যোগ্য করলায় ২ গ্রাম আমিষ,২০ থেকে ২৩ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম,২ মিলিগ্রাম লৌহ, ৮৮.৯৬ মিলিগ্রাম খাদ্যপ্রাণ সি থাকে।