Type Here to Get Search Results !

বিরামপুরে বিদ্যালয়ের শ্রেণী কক্ষে চলছে কোচিং

ইব্রাহীম মিঞা, বিরামপুর দিনাজপুর প্রতিনিধি : দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে শ্রেণী কক্ষে চলছে কোচিং বাণিজ্য।
যদিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের কোচিং বাণিজ্য বন্ধ নীতিমালা-২০১২ বলা হয়েছে সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোনো শিক্ষক কোচিং বাণিজ্যে জড়িত থাকলে তাঁর বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপীল) বিধিমালা, ১৯৮৫ এর অধীনে অসদাচরণ হিসেবে গণ্য করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এছাড়াও বলা হয়েছে কোনো শিক্ষক কোচিং বাণিজ্যে জড়িত থাকলে তাঁর এমপিও স্থগিত, বাতিল, বেতন ভাতাদি স্থগিত, বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি স্থগিত, বেতন এক ধাপ অবনমিতকরণ, সাময়িক বরখাস্ত, চূড়ান্ত বরখাস্ত ইত্যাদি শাস্তিমূলক ব্যবস্থা কর্তৃপক্ষ গ্রহণ করবেন। এই নীতিমালাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বিরামপুর সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুল খালেক বিদ্যালয়ের নৈশপ্রহরীকে দিয়ে বিদ্যালয়ের শ্রেণী কক্ষে চালিয়ে যাচ্ছেন কোচিং বাণিজ্য।
নীতিমালায় আরো বলা হয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠদান কার্যক্রম চলাকালীন শ্রেণি সময়ের মধ্যে কোন শিক্ষক কোচিং করাতে পারবেন না। তবে আগ্রহী শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নির্ধারিত সময়ের পূর্বে বা পরে শুধুমাত্র অভিভাবকদের আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রতিষ্ঠান প্রধান অতিরিক্ত ক্লাসের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবেন।
এ ক্ষেত্রে প্রতি বিষয়ে মেট্রোপলিটন শহরে মাসিক সর্বোচ্চ ৩০০ (তিনশত) টাকা, জেলা শহরে ২০০ (দুইশত) টাকা এবং উপজেলা বা স্থানীয় পর্যায়ে ১৫০ (একশত পঞ্চাশ) টাকা রসিদের মাধ্যমে অতিরিক্ত সময় ক্লাস পরিচালনার জন্য আগ্রহী শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে ফি আকারে গ্রহণ করা যাবে যা সর্বোচ্চ ১,২০০ (এক হাজার দুইশত) টাকার অধিক হবে না। দরিদ্র শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠান প্রধান স্ববিবেচনায় এ হার কমাতে/মওকুফ করতে পারবেন। একটি বিষয়ে মাসে সর্বনিম্ন ১২(বার) টি ক্লাস অনুষ্ঠিত হতে হবে এবং এক্ষেত্রে প্রতিটি ক্লাসে সর্বোচ্চ ৪০ (চল্লিশ) জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করতে পারবে। এনীতিমালার তোয়াক্কা না করে, আবেদন ছাড়াই অনেক প্রতিষ্ঠানে অতিরিক্ত ক্লাসের নামে চলছে কোচিং বাণিজ্য এবং রশিদ ছাড়া নেওয়া হচ্ছে টাকা এছাড়াও হতদরিদ্র পরিবারের প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীসহ সকলের কাছ থেকে নেওয়া হচ্ছে ৫০০-৭০০ করে টাকা।
বিরামপুর উপজেলার বেশ কিছু স্কুল,কলেজে, মাদ্রাসা ও ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট এর কিছু শিক্ষক আইন না মেনে অন্য বিদ্যালয়ের শ্রেণী কক্ষে এবং ভাড়াবাড়িসহ নিজ বাড়িতে প্রতিষ্ঠান প্রধানকে অবহিত না করে প্রাইভেটসহ কোচিং বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে। এবিষয়ে অভিভাবকরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, কোচিং বাণিজ্য এখন মহামারিতে পরিণত হয়েছে। যেহেতু একই শিক্ষক স্কুলে পড়ান, আবার (অতিরিক্ত ক্লাস)কোচিং ও প্রাইভেট পড়ান, তাই কোচিং ও প্রাইভেটে না গেলে স্কুলে নানাভাবে হেয় করা হয়, নম্বর কম দেয়া হয়।৪/৫টি বিষয়ে (অতিরিক্ত ক্লাস)কোচিং এবং প্রাইভেট পড়াতে মধ্যবিত্ত, নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের অভিভাবকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের প্রাইভেট পড়ানো এবং কোচিং বাণিজ্য বন্ধ নীতিমালা-২০১২ বাস্তবায়নে কর্তৃপক্ষের অবহেলাকে দায়ী করেন।
বিরামপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শমসের আলী মন্ডলের সাথে মুঠোফোনে কথা বললে তিনি বলেন, নীতিমালার বাইরে কোন শিক্ষক প্রাইভেট অথবা কোচিং বাণিজ্য করলে সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আশ্বাস দেন তিনি।
বিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুজহাত তাসনীম আওন বলেন, আমি শিক্ষকদের নিয়ে বসবো এবং বিষয়টি দেখবো।
বিভাগ