রোস্তম আলী কাহারোল দিনাজপুর থেকে:দিনাজপুরের কাহারোল উপজেলা প্রশাসনের তৎপরতায় ভূমিদস্যুদের হাত থেকে সরকারি খাস খতিয়ানের প্রায় আড়াই একর জমির ১০৫ মণ ধান উদ্ধার করে ৫৫ হাজার ৯০০ টাকা সরকারি কোডে জমা করেছে উপজেলা প্রশাসন।
একটি কুচক্রী মহল এ বিষয়টিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে কিছু সংবাদপত্রে ভুল তথ্য সম্বলিত খবর প্রকাশ করে উপজেলা প্রশাসনের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার চেষ্টা চালায় বলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আমিনুল ইসলাম জানায়।
মঙ্গলবার (১১ জুন/২৪) উপজেলা প্রশাসনের বিবরণে জানা যায়, দিনাজপুরের কাহারোল উপজেলাধীন মুকুন্দপুর ইউনিয়নের চক বাজিতপুর মৌজার এক নম্বর খতিয়ান ভুক্ত দুই দাগে প্রায় আড়াই একর জমি পুকুর শ্রেণী হিসেবে পাকিস্তান প্রদেশ পক্ষে দিনাজপুর ডেপুটি কমিশনার নামে রেকর্ডভুক্ত হয়। বর্ণিত তফসিল সম্পত্তি সি এস খতিয়ান থেকে বর্তমান ডিপি খতিয়ান পর্যন্ত মালিকানা বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে রয়েছে। পুকুরটি মাটি দিয়ে ভরাট হলে উপজেলার মহদি পুর গ্রামের বজলুর মিয়ার উত্তরাধী ভূমিদস্যু আব্দুর রাজ্জাক আনিত ১৩১২১ /৬৩-৬৪ নম্বর বন্দোবস্ত দলিল মূলে জমি পত্তন/ইজারাকৃত হিসেবে এবং বন্দোবস্ত কেস মূলে জমি দাবী করে তার মাতা সবেজা বেগমকে বাদী করে নিম্ন আদালতে মামলা দায়ের করলে আদালত তা না মঞ্জুর করে। পুনরায় আপিল করলে দ্বিতীয় আদালতেও পূর্বের রায় বহাল রাখে।পরবর্তীতে মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগে ৭৭৭/২০২২নম্বর সিভিল রিভিশন অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আদেশ চেয়ে মোকদ্দমা দায়ের করলে গত ১৪ মার্চ ২০২৩ বিজ্ঞ আদালত নিষেধাক্ষার পরিবর্তে উভয় পক্ষকে স্থিতবস্থা বজায় রাখার আদেশ দেন। আদালতের আদেশ উপেক্ষা করে ভূমিদস্যু আব্দুর রাজ্জাক গং ঐ জমিতে ধান রোপন করলে উপজেলা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আলোচনা সাপেক্ষে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করে সঙ্গীয় স্থানীয় পুলিশ বাহিনীর সহযোগিতায় জমিতে হারভেস্টার মেশিন দ্বারা রোপনকৃত ধান কর্তন-পূর্বক ১০৫ মণ ধান প্রকাশ্য নিলামের মাধ্যমে বিক্রয় করে ৫৫ হাজার ৯০০ টাকা সরকারি কোডে জমা করে।
কাহারোল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আমিনুল ইসলাম জানান,১০ জুন দিনাজপুর জেলা সাবরেজিস্টার কার্যালয়ের প্রাপ্ত তথ্য মোতাবেক ভূমিদস্যু আব্দুর রাজ্জাক যে দলিল দাখিল করেছেন তাহা একটি জাল দলিল। কেননা ১৯৬৪ সালে বীরগঞ্জ উপজেলার সাব রেজিস্টার অফিসে সর্বশেষ দলিল নম্বর ছিল ৫২৫৪ অথচ ভূমিদস্যু আব্দুর রাজ্জাক যে দলিল দাখিল করেছেন তার নম্বর রয়েছে ১৩১২১ এছাড়াও দিনাজপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের দাখিলকৃত প্রতিবেদন মোতাবেক বন্দোবস্ত কেস নম্বর ১২/৫১১/৬৩-৬৪ এ বাদী কর্তৃক আনীত কাহারোলে কোন তথ্য পাওয়া যায়নি,উল্লেখিত বন্দোবস্ত কেস নম্বরে বজলার মিয়ার পরিবর্তে দিনাজপুর সদর উপজেলার কালিতলা মোঃ ইউসুফ খানের নামে বন্দোবস্ত রয়েছে।
কাহারোল সহকারী কমিশনার(ভূমি) মোঃ বোরহান উদ্দিন জানায় ১৪২৮ বঙ্গাব্দে উপজেলা ভূমি অফিসের সায়রাত রেজিস্টার পর্যালোচনা করে দেখা যায় উক্ত পুকুরটি সর্বশেষ ১৪২৬-১৪২৭ বঙ্গাব্দে ইজারা দেওয়া হয়েছে এবং সর্বশেষ ১৪২৮ বঙ্গাব্দে সৃজিত আমন ধানের ফসল বাবদ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর মাধ্যমে বিক্রয়লব্ধ ২৭ হাজার ৪৪০ টাকা সরকারি কোডে জমা হয়েছে। এছাড়াও উপজেলা রাজস্ব সভায় উক্ত পুকুরটি ভরাট হওয়ার কারণে মাছ চাষের অনুপযোগী হওয়ায় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ সনের পহেলা বৈশাখ হইতে ৩০ চৈত্র পর্যন্ত এককালীন মূল্যে প্রকাশ্য নিলামে খাস আদায় কার্যক্রম গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয় এবং পুকুর/জমিতে খাস আদায়ের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।