চিলাহাটি ওয়েব, প্রযুক্তি ডেস্ক : ডিসেম্বরে আতশবাজির মতো উল্কাবৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছেন ভারতের জ্যোতির্বিজ্ঞানী ডক্টর বীরেন্দ্র যাদব।
গোটা ডিসেম্বর জুড়েই এই উল্কাবৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও ১৩-১৪ ডিসেম্বর সবচেয়ে বেশি পরিমাণে তা দেখা যাবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
এ সময়ে ঝাঁকে ঝাঁকে এই উল্কাখণ্ডগুলো পৃথিবীর বুকে ঝড়ে পড়বে। যা ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১৫০টার মতো হতে পারে।
ভারতের নৈনিতালের আর্যভট্ট অবজারভেশনাল সায়েন্স রিসার্চ ইনস্টিটিউট (এআরআইইএস)-এর বিজ্ঞানী ডক্টর বীরেন্দ্র যাদবের মতে, জ্যোতির্বিদ্যায় এই ঘটনার নাম ‘জেমিনিড উল্কাপাত।’
তিনি বলেন, এই প্রক্রিয়াটি নভেম্বর থেকে শুরু হয়েছে, যা ২৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে।
তিনি আরও জানান, এই ঘটনাকে ‘তারাখসা’ বলা হলেও এর সঙ্গে তারার কোন সম্পর্ক নেই। কোন ধুমকেতুর ধ্বংসাবশেষ পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ বলের প্রভাবে তার দিকে ছুটে আসতে থাকে।
কিন্তু ভূ-পৃষ্ঠ থেকে ১০০ কিলোমিটার উচ্চতায় বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করার আগে সেগুলি জ্বলতে শুরু করে। এই জ্বলন্ত উল্কা ধংসাবশেষকে ‘তারাখসা’ বলা হয়।
পৃথিবী-বহির্ভূত যে কোনও বস্তু যখন পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করে তখন বস্তুটির চাপ, তাপমাত্রা, উপাদান, ভর প্রভৃতি পরিবর্তিত হয়।
বায়ুমণ্ডলীয় উপাদানের সঙ্গে বস্তুর সংঘর্ষ ঘটে ও রাসায়নিক বিক্রিয়া হয়।
একইভাবে উল্কাখণ্ড বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করার ফলে অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা এতটাই বেড়ে যায় যে তার বাইরের অংশ পুড়ে যায়। এই সময় তীব্র তাপের কারণে উজ্জ্বল আলোকছটার সৃষ্টি হয়, আর একে ‘তারা খসা’ বলে। কিছু উল্কা একই উৎস হতে উৎপন্ন হয়ে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশে ভেঙে যায়। তারা যখন একসঙ্গে জ্বলন্ত অবস্থায় পৃথিবীর বুকে ছুটে আসে, তাকে বলে উল্কাবৃষ্টি।
কেন ডিসেম্বর মাসে?
সারাবছরই আকাশে উল্কাপাত হয়ে থাকে। তবে শীতকালে যেহেতু রাতের আকাশ পরিষ্কার থাকে তাই সহজে এদের দেখা যায়।
কিসের ভিত্তিতে এদের নামকরণ
মহাকাশ বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, গ্রহাণু বলায় ছাড়াও উল্কা সৌরজগতের অন্যন্তর থেকে উৎপত্তি লাভ করে। বিজ্ঞানী ড. যাদবের মতে, যেখান থেকে এদের উৎপত্তি তার ভিত্তিতেই এদের নামকরণ করা হয়ে থাকে। পৃথিবীপৃষ্ঠের উপর পাওয়া উল্কার ধ্বংসাবশেষ বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, বেশ কিছু উল্কার উৎপত্তি চাঁদ বা মঙ্গলগ্রহ থেকে।