পার্বতীপুর প্রতিনিধি,চিলাহাটি ওয়েব :-একই সঙ্গে, একযোগে বাংলাদেশের শিশুরা এক মিনিট ধরে ঘন্টা বাজিয়ে সকল প্রতিবন্ধী শিশুর শিক্ষার অধিকার আদায়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলো নীতি নির্ধারক ও দেশবাসীর। "We ring the bell" নামক বিশ্বব্যাপী ক্যাম্পেইনের অংশ হিসেবে বাংলাদেশের প্রতিবন্ধী ও অ-প্রতিবন্ধী শিশুরা ১ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ঘন্টা, ঢোল, বাদ্যযন্ত্র এমনকি থালা বাসনে আওয়াজ তুলে প্রতীকী এ কর্মসূচী পালন করেছে। একই সময়ে বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের হাজার হাজার শিক্ষার্থী "We ring the bell" নামক এই ক্যাম্পেইনে অংশগ্রহণ করেছে।
গতকাল মঙ্গলবার ২৬ সেপ্টেম্বর/২৩ দুপুর ১২টায় এ বছর “ডব ৎরহম ঃযব নবষষ এর মূল বার্তা হল: ” আমরা চাই প্রতিবন্ধীসহ সকল শিশু বিদ্যালয়ে আসুক”। যে সমস্ত প্রতিবন্ধী শিশু স্কুলে যেতে পারেনা তাদের শিক্ষার অধিকার নিশ্চিত করার জন্য অন্য সকল প্রতিবন্ধী ও প্রতিবন্ধী নয় এমন সকল শিশু, তাদের শিক্ষক, অভিভাবক মিলে এ কর্মসূচী পালনের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ঠ নীতি নির্ধারন কর্তৃপক্ষের মনোযোগ আকর্ষন করলো। পার্বতীপুর দিনাজপুর রাজাবাসর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালংয়ে দুপুর বারোটা থেকে বারোটা এক মিনিট পর্যন্ত একযোগে ঘন্টাধ্বনী বাজালো শিশুরা। এ কর্মসূচীতে বিশিষ্টজন ও নীতি নির্ধারনী কর্তৃপক্ষের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. আশরাফুল হক প্রধান, উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মো. আনিসুর রহমান , কাম টু ওয়ার্ক (সিটিডাব্লিউ) নির্বাহী পরিচালক মো.মতিউর রহমান ও সিটিডাব্লিউ কর্মকর্তা গন ।
এই কার্যক্রমটি একইভাবে উদযাপন করছে প্রতিবন্ধী ও সাধারণ স্কুলগামী শিক্ষার্থীরা তাদের স্কুলের আঙ্গিনায় একত্রিত হয়ে ১ মিনিট ব্যাপি বেল ও ড্রাম বাজিয়ে অসাধারণ ভাবে কোলাহল তৈরী করেছে। "We ring the bell" ক্যাম্পেইনের পাশাপাশি একই দিন স্বাক্ষর ক্যাম্পেইন নামে আরো একটি পৃথক কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়।
উদ্দেশ্য একটাই প্রতিবন্ধী শিশুদের বিদ্যালয়ে গমনের বিষয়ে সমাজের সকল স্তরের মানুষকে সচেতন করা এবং তাদের অধিকারের বিষয়ে সোচ্চার হওয়া । এই কর্মসূচীর মাধ্যমে তারা প্রতিবন্ধী শিশুদের বিদ্যালয় গমনে প্রতিবন্ধকতা দূর করার মাধ্যমে সকল প্রতিবন্ধী শিশুর শিক্ষার অধিকার নিশ্চিত করার জন্য নীতি-নির্ধারক ও সংশ্লিষ্ঠদের দৃষ্টি আকর্ষণ করলো।
"We ring the bell" ক্যাম্পেইনটি নেদারল্যান্ড ভিত্তিক লিলিয়ান ফাউন্ডেশনের একটি উদ্যোগ যা বাংলাদেশে এর কৌশলগত অংশীদার সিডিডি সারাদেশে পালন করছে। বাংলাদেশের প্রতিবন্ধী শিশুদের শিক্ষায় সহায়তা প্রদান ও সকলকে শিক্ষার আওতায় নিয়ে আসার জন্য লিলিয়ান ফাউন্ডেশন সিডিডি-কে সহায়তা করছে এবং অংশীদার সংগঠনের কাম টু ওয়ার্ক (সিটিডাব্লিউ) মাধ্যমে পার্বতীপুর উপজেলায় তা বাস্তবায়ন করছে। কিন্তু বাংলাদেশে ও সারা বিশ্বে এ বিষয়ে সহায়তা বাড়ানো প্রয়োজন। এসব স্কুল প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য আক্ষরিক ও চরিত্রগত ভাবে আরও বেশি প্রবেশগম্য হওয়া প্রয়োজন। শিক্ষক ও শিক্ষা উপকরণ যেন প্রতিবন্ধী শিশুদের চাহিদা পূরণ করতে পারে এবং শিক্ষা যে প্রতিবন্ধী শিশুরও মৌলিক অধিকার সেটা যেন সকলে অনুধান করে।
বৈশ্বিক লক্ষ্য
২০০০ সালে জাতিসংঘের ২০০ টি দেশ আটটি বিষয়ে সহ¤্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এমডিজি) অর্জনে সম্মত হয়। এর মধ্যে একটি লক্ষ্য হল ২০১৫ সালের মধ্যে শতভাগ শিশু প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যাবে, যা এখনো অর্জিত হয়নি। সারা বিশ্বে অনেকশিশু (৮৯% পর্যন্ত) বিদ্যালয়ে যাচ্ছে, কিন্তু প্রতিবন্ধী শিশুদের ক্ষেত্রে নি¤œ ও মধ্যম আয়ের দেশ সমূহে মাত্র ১০% প্রতিবন্ধী শিশু স্কুলে যায়। এমনকি নেদারল্যান্ডেও তাদের অংশগ্রহণ অনেক কম। "We ring the bell" যদিও একটি বাৎসরিক অনুষ্ঠান, কিন্তু ২০২৩ সালে এর গুরুত্ব¡ সর্বাপেক্ষা বেশি। জাতিসংঘ টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্য নিয়ে কঠোরভাবে কাজ করছে। ২০১৬ থেকে পরবর্তী সময়ের জন্য জাতিসংঘ নতুন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করে তা অর্জনে কাজ করছে। এরা হল বিশেষভাবে প্রতিবন্ধী শিশু ও পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তি। ২০০০ সাল থেকে তারা খুব কমই উন্নয়ন করতে পেরেছে। এই অবস্থার পরিবর্তন হওয়ার এটাই মূখ্য সময় এবং এই পরিবর্তনের ডাক বিশ্বব্যপি যত উচ্চ ঝংকার তুলবে বিশ্ববাসী সেই ডাক তত ভাল শুনতে পাবে।