আফজাল হোসেন, ফুলবাড়ী, প্রতিনিধি:-দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলায় গত তিনদিনের ভারী বর্ষণে বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের ঘর বাড়ী ডুবে গেছে, অসহায় পরিবারের লোক জন আশ্রয় নিয়েছে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে।
ফুলবাড়ী উপজেলার শিবনগর ইউনিয়নের আদর্শ কলেজপাড়া গ্রামের প্রায় ১২০ টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছে আদর্শ কলেজ পাড়া কলেজিয়েট উচ্চ বিদ্যালয়ে। অপরদিকে ইউনিয়নের দেবীপুর আশ্রয়ন কেন্দ্রেও পানি প্রবেশ করায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে অসহায় মানুষগুলো।
উপজেলার খয়েরবাড়ী ইউনিয়নের বালুপাড়া আবাসন, লালপুর, অম্রবাড়ীসহ বিভিন্ন জায়গায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অনেক পরিবার, একইভাবে এলুয়াড়ী ইউনিয়নেও বেশ কিছু পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের কাছে তৎক্ষনাত ছুটে গেছেন ফুলবাড়ী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মিল্টন।
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের রান্না করা খাবার, শুকনা খাবার ও নগদ আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মিলটন।
এ বিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মিলটন জানান অত্র এলাকার অভিভাবক মাননীয় সংসদ সদস্য বীরমুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার (এমপি)’র নির্দেশে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের সামর্থ্য অনুযায়ী সহযোগিতা করেছি, শুকনো খাবার, রান্না করা খাবার ,ঘরবাড়ী ভেঙে পড়া পরিবারদের আর্থিক সহায়তা প্রদান ও দিনমজুরদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছি।
এ দিকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুশফিকুর রহমান বাবুলের পক্ষ থেকে অসহায় পরিবারদের কাছে শুকনা খাবার পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের অন্যতম সদস্য সৈয়দ হাসান মেহেদী রুবেল জানান উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মুশফিকুর রহমান বাবুল ঢাকায় থাকায় তিনি সরাসরি উপস্থিত হতে পারেননি তার নির্দেশে তার পক্ষ থেকে আমরা এই ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের শুকনো খাবার পৌঁছে দিয়েছি।
এদিকে ফুলবাড়ী উপজেলা বন্যার খবর পেয়ে জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে তিন টন চাল পাঠানো হয়েছে, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মীর মোহাম্মাদ আল কামাহ তমাল জানান জেলা প্রশাসক মহোদয়ের বরাদ্দ কৃত চাল অসহায় পরিবারদের কাছে খুব দ্রুত পৌঁছে দেওয়া হবে। গতকাল সোমবার দুপুর ১২টায় কলেজিয়েট উচ্চ বিদ্যালয় ও শহীদ স্মৃতি আদর্শ কলেজে আশ্রয় গ্রহণ করা অসহায় পরিবারদের মাঝে উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা নিজে গিয়ে চাউল বিরণ করেন।
এ বিষয়ে ফুলবাড়ী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শফিউল ইসলাম জানান চলমান ভারী বর্ষণে উপজেলার প্রায় ৩৬০ টি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তারা বিভিন্ন জায়গায় আশ্রয়, নিয়েছে জেলা প্রশাসক মহোদয় বন্যার খবর পেয়ে ফুলবাড়ী উপজেলার ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ৩ টন চাল বরাদ্দ দিয়েছেন, প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে সেগুলো খুব দ্রুত ক্ষতিগ্রস্তদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে।
এদিকে তথ্য নিয়ে জানা গেছে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শিবনগর ইউনিয়ন, এ বিষয়ে শিবনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছামেদুল ইসলাম জানান আমার ইউনিয়নের প্রায় ১৬০টি পরিবার এই বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, বেশ কিছু রাস্তাঘাট ভেঙ্গে গেছে, শিবনগর ইউনিয়নের অন্যতম হাট আমডুঙ্গী হাটের কিছু অংশ ভেঙ্গে গেছে, আবাসন গুলোতে পানি ঢুকেছে,অনেক মানুষ অসহায় হয়ে পড়েছে, আমরা সাধ্যমত তাদের সহযোগিতা করার চেষ্টা করছি। বন্যার পানি নেমে গেলে ক্ষতিগ্রস্থদেরকে বাড়ী নির্মানে সহায়তা করা হবে।
আশ্রয় গ্রহণকারী ব্যক্তিদের বিষয়ে কলেজিয়েট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষাক মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান জানান, গত দুইদিন থেকে অত্র প্রতিষ্ঠানে প্রায় ৩০০ থেকে ৪০০ লোক আশ্রয় গ্রহণ করেছে। আমরা তাদের নিরাপদে থাকার জন্য সাধ্যমত ব্যবস্থাগ্রহণ করেছি। এবং বিদ্যালয়ের পাঠদান আপাতত বন্ধ রেখেছি। যাতে করে অসহায় মানুষজন এখানে আশ্রয় গ্রহণ করতে পারে।
ফুলবাড়ীর বিশিষ্ট জনরা বলেছেন ছোট যমুনা নদীটি খনন না করায় অল্প বৃষ্টিতেই নদীর পানি ওভার হয়ে বাড়ীঘরে প্রবেশ করছে । এই নদীটি দ্রুত খনন করলে এমন অস্থার সম্মুখিন হতে হবে না। পাশাপাশি ক্ষরশ্রতা এই যমুনা নদীটি প্রান চানচল্য ফিরে পাবে। তাই নদীটি দ্রুত খনন করা এখন সময়ের দাবী।