আপেল বসুনীয়া, চিলাহাটি ওয়েব : একদিকে স্বামীর সংসারের ঘানি অন্য দিকে নিজের স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দিনরাত কঠোর পরিশ্রম করে সাফল্যের মুখ দেখতে শুরু করেছেন প্রত্যন্ত অঞ্চলের এক নারী উদ্যোক্তা (গৃহিনী) মেরিনা।
স্বামী-সংসারের উপর নির্ভরশীল না হয়ে নিজ পায়ে দাঁড়ানোর লক্ষ্যে হাঁস পালন শুরু করে আত্মনির্ভরশীল হয়ে উঠেছেন তিনি। তার এই প্রচেষ্টা দেখে বাড়তি আয়ের আশায় এলাকার অনেকেই আগ্রহী হচ্ছেন হাঁস পালনে।
বিদেশী জাতের পেকিন হাঁস পালনের খামার করে দারিদ্র্যতাকে জয় করেছেন নীলফামারী জেলার চিলাহাটির ছয় ফুটিয়া গ্রামের মেরিনা বেগম। মেরিনা দম্পতির অনেক আগে থেকেই একজন বড় খামারি হবেন এই স্বপ্ন। এই স্বপ্ন পূরণ করতে বাজার থেকে বেলজিয়াম নামে সাদা রংয়ের কয়েকটি হাঁস কিনে নিয়ে আসে। এ হাস দেখতে অনেক সুন্দর, দ্রুত বর্ধনশীল হওয়ায় ও বাজারে অনেক চাহিদা ও দাম থাকায় হাঁস পালনের স্বপ্ন আরও বেড়ে যায়। তিনি শার্পের ঋণি সদস্য। তিনি জানতে পারেন চিলাহাটি শাখায় সমন্বিত কৃষি ইউনিট এর প্রাণিসম্পদ খাতের আওতায় বিভিন্ন প্রদর্শনী বাস্তবায়ন হচ্ছে। তার স্বপ্নের কথা জানালে পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) এর অর্থায়নে ও কারিগরি সহযোগিতায় ১০০ টি পেকিন হাঁস এর বাচ্চা নিয়ে খামার শুরু করেন। তিনি শার্পের চিলাহাটি শাখা হতে হাঁস পালন বিষয়ক প্রশিক্ষণ নেন।
পেকিন হাঁস ব্রয়লার টাইপ, দ্রুত বর্ধনশীল হওয়ায় ৬০-৭০ দিনে প্রায় ২-২.৫ কেজি ওজন আসে, যার বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ৫০-৫৫ হাজার টাকা। খাবার, ঔষধ ও বাচ্চার খরচ বাদে ২৫-৩০ হাজার টাকা লাভ হবে।
স্থানীয় একজন স্কুল শিক্ষক চিলাহাটি ওয়েবকে বলেন- পেকিন জাতের হাঁস দেখতে যেমন সুন্দর, তেমন অল্প সময়ে ওজন আসে, বড় হয়, অন্য হাঁসের তুলনায় বেশি লাভবান হওয়া সম্ভব। আমিও ৫০০ পেকিন জাতের হাঁস পালন করতে চাই।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা: মো: মোজাম্মেল হক চিলাহাটি ওয়েবকে বলেন- শার্পের সমন্বিত কৃষি ইউনিট প্রাণিসম্পদ খাতের মাধ্যমে পেকিন জাতের হাঁস সম্প্রসারণ হচ্ছে। পানিতে না ছেড়েও এ হাঁস পালন করা যায়। এ হাঁস দ্রুত বর্ধনশীল হওয়ায় বেশি আয় করা যায়।
মেরিনা দম্পতির স্বপ্ন, তারা ১০০০ পেকিন জাতের হাঁস এর খামার করবেন। বাচ্চার সরবরাহ বৃদ্ধির জন্য হ্যাচারী গড়ে তুলবেন।