Type Here to Get Search Results !

চিলাহাটিতে অনুমোদন বিহীন ডেলিভারি সেন্টারে ২ জনের মৃত্যু

চিলাহাটি ওয়েব ডেস্ক : নীলফামারী জেলার চিলাহাটিতে অনুমোদন বিহীন নরমাল ডেলিভারি সেন্টারে সেবা নিতে গিয়ে ২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। দ্রুত ওই ডেলিভারি সেন্টার বন্ধ করে অভিযুক্তকে আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবী জানিয়ে সিভিল সার্জন বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী পরিবার।
জানা যায়- চিলাহাটির ভোগডাবুড়ি ইউনিয়নের গোসাইগঞ্জ বাজারে দীর্ঘ ৩ বছর ধরে "শামিম ফার্মেসী’র ব্যানারে ফার্মেসীর ভিতরে নরমাল ডেলিভারি করাচ্ছেন শাহার মোড় এলাকার মকলেছার রহমানের স্ত্রী সুইটি আক্তার (৩৫)। দীর্ঘদিন থেকে তিনি বাচ্চা-প্রসবের নামে অনেক রোগীদের কাছে অনেক টাকা হাতিয়েছেন অভিযোগ করেন এলাকাবাসী।
সম্প্রতি সুইটি আক্তার এক রোগীর অভিভাবকদের অনুমতি না নিয়ে রোগীর যোনীপথ কেটে বাচ্চা প্রসব করে রোগীকে রিলিজ দিয়েছে। বাসায় নেয়ার পর মা ও শিশুর অবস্থা খারাপ দেখে স্থানীয় একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের গাইনি ডাক্টারের কাছে নিয়ে গেলে গাইনি ডাক্টার পরিক্ষা-নিরিক্ষা করে রোগীকে দ্রুত উন্নত চিকিৎসার পরামর্শ দেন। 
অভিযোগে আরো উল্লেখ করেন, ইতিপূর্বে সুইটি আক্তারের কাছে নরমাল ডেলিভারী করাতে এসে চিলাহাটি বাজারস্থ মাছ ব্যবসায়ী মজনুর বোন মৃত্যু বরন করেন এবং ভুল চিকিৎসা দিয়ে কামার পাড়ার মালা আর্মির পুত্রবধূ রেজভী আক্তারের সন্তানকেও মেরে ফেলে। এভাবে আরো অনেকের প্রানহানি ঘটায়।
এ ব্যাপারে রেজভী আক্তার বলেন- গত জুন মাসের মাঝামাঝি সময়ে আমার প্রসব বেদনা উঠলে পরিবারের লোকজন আমাকে রাত ৯টায় সুইটি আক্তারের শামিম ফার্মেসীতে নিয়ে যায়। দ্রুত চিকিৎসা না দিয়ে সেখানে নেয়ার ১ ঘন্টা আমাকে ওইভাবেই রেখে দিয়ে কাজের মহিলার মাধ্যমে প্রাথমিক কিছু চিকিৎসা প্রদান করেন। সে রাতে আমার প্রসব বেদনা উঠলে পেট ব্যাথার ঔষধ (Algin 50mg) সেবন করায় এবং কিছুক্ষন পর ব্যাথা কমে গেলে স্যালাইন লাগানো হয়। তিনি আরো বলেন- সেখানকার পরিবেশ অস্বাভাবিক হওয়ায় আমি সেখানে ডেলিভারি করার ব্যাপারে একদম রাজি ছিলাম না। কিন্তু সুইটি আপা আমাকে জোড় করে সেখানেই গভীর রাতে বাচ্চা প্রসব করায়। একটা সময় আমি অচেতন হয়ে গেলে তিনি বিভিন্ন চিকিৎসা দিয়ে আমাকে সুস্থ করার চেষ্টা করেন। আমার এবং বাচ্চার অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে আমার স্বজনেরা দ্রুত নীলফামারী সদর হাসপাতালে নিলে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক আমার বাচ্চাকে মৃত ঘোষণা করেন।
তিনি বলেন- আমার ইচ্ছের বিরুদ্ধে ডেলিভারি করিয়ে সুইটি আমার বাচ্চাকে হত্যা করে আমি তার শাস্তি চাই।সুইটি আক্তারের নরমাল ডেলিভারি সেন্টারে সঠিক চিকিৎসা না পেয়ে নিজের প্রসূতি বোনকে হারিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন চিলাহাটি বাজারস্থ মাছ ব্যবসায়ী মজনু ইসলাম। তিনি অভিযোগ করে বলেন সুইটির ডেলিভারি সেন্টারে বাচ্চা প্রসবের পর রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেয়ার সময় রাস্তায় তার বোন মারা যান। ভুক্তভোগীরা বলেন, আমরা সুইটি আক্তাদের ডেলিভারি সেন্টার বন্ধ এবং তাকে আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবী জানাচ্ছি।
এদিকে শামিম ফার্মেসীর প্রো: সুইটি আক্তার বলেন- ২০২০ সালে ড্রাগ লাইসেন্স নিয়ে ফার্মেসী শুরু করি। ফার্মেসীতে সাধারন রোগীদের চিকিৎসা দেয়ার পাশাপাশি পূর্বের কাজের সুবাধে পরিচিত কোনো ডেলিভারি রোগী যোগাযোগ করলে শামিম ফার্মেসীতে নরমাল ডেলিভারি করাই। ডেলিভারি সেন্টারের নিবন্ধনের ব্যাপারে তিনি বলেন, নরমাল ডেলিভারি সেন্টারের নিবন্ধন নিতে হয় এটা তার জানা ছিল না।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা এসেছিলেন এবং এ ব্যাপারে বলেছিলেন। দ্রুত নিবন্ধন করে ফেলবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডোমার উপজেলা স্যানিটারি ইন্সপেক্টর আল আমিন রহমান জানান- লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে। তদন্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।