চিলাহাটি ওয়েব, আন্তর্জাতিক ডেস্ক : তাজমহলে শুভ্র-সুন্দর রূপ হারিয়ে যাচ্ছে। সাদা মার্বেলে লেগেছে সবুজ ও হলদে ছোপ। মার্বেলের রং বদলে যাচ্ছে। ঝুঁকিতে তাজমহলের চারপাশের পরিবেশ। অন্যদিকে, যে যমুনা নদীর পানিতে তাজমহলের অপরূপ প্রতিবিম্ব দেখা যেত, সেই নদী দিন দিন শুকিয়ে যাচ্ছে। সমস্যা তৈরি করছে যমুনা নদীর দূষিত পানি। এভাবে নানা সমস্যার আবর্তে পড়ে দুর্বল হয়ে পড়ছে তাজমহলের ভিতও। যেকোনো সময় বিস্ময়কর এই সমাধি দেবে যেতে পারে। এমন মতামত বিশেষজ্ঞদের।
তাজমহল নির্মাণের পর ৩৫০ বছরের বেশি সময় কেটে গেছে। এই মুঘল কীর্তি এখন ভারতের জাতীয় প্রত্নতাত্ত্বিক সম্পদ। স্থাপত্যশৈলী আর চোখধাঁধানো কারুকাজের জন্য এর আবেদন সর্বজনীন। গত শতাব্দীর শেষভাগ থেকে তাজমহলের ভবিষ্যৎ নিয়ে আদালতে বিচার-বিশ্লেষণ হচ্ছে। আদালত ধারাবাহিকভাবে নানা নিয়মকানুন চালুর নির্দেশ দিয়েছেন এবং এখনো দিচ্ছেন। আদালতের উষ্মা, সরকারি রক্ষণাবেক্ষণ প্রতিষ্ঠান ও সরকার নিজে তাজমহলকে রক্ষার জন্য যথেষ্ট পদক্ষেপ নিচ্ছে না। যদিও সরকারের বক্তব্য, সাধ্যমতো সবই করা হচ্ছে।
তাজমহলে সমস্যা কী? অনেক। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তাজমহলে শুভ্র-সুন্দর রূপ হারিয়ে যাচ্ছে। সাদা মার্বেলে লাগছে সবুজ ও হলদে ছোপ। মার্বেলের রং বদলে যাচ্ছে। ঝুঁকিতে আছে তাজমহলের চারপাশের পরিবেশ। অন্যদিকে, যে যমুনা নদীর পানিতে তাজমহলের অপরূপ প্রতিবিম্ব দেখা যেত, সেই নদী দিন দিন শুকিয়ে যাচ্ছে। সমস্যা তৈরি করছে যমুনা নদীর দূষিত পানি। এই নানাবিধ সমস্যার প্রতিক্রিয়ায় দুর্বল হয়ে পড়ছে তাজমহলের ভিত্তিও। যেকোনো সময় নাকি মাটিতে দেবেও যেতে পারে মমতাজের এই সমাধিস্থল!
প্রায় ২২ বছরের মহাযজ্ঞ শেষে ১৬৫২ সালে শেষ হয় তাজমহলের নির্মাণকাজ। এই স্থাপনা নির্মাণে শ্রম দিয়েছেন ২০ হাজারের বেশি শ্রমিক। ঐতিহাসিকদের মতে, এই মুঘল স্থাপত্যে একাকার হয়েছে ভারত, পারস্য ও ইসলামি ধারা। তাজমহল তৈরিতে ইউরোপ ও অটোমান সাম্রাজ্য থেকেও শ্রমিকেরা এসেছিলেন। এসবের মিশেল হলো তাজমহল বা মমতাজ মহল। ১৯৮৩ সালের ইউনেসকো একে বিশ্ব ঐতিহ্যের অন্তর্ভুক্ত করে।
মজার বিষয় হলো, বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ হওয়ার সময় থেকেই তাজমহলের রক্ষণাবেক্ষণ আদালতে দৃষ্টিগোচরে আনা হয়েছিল। তখন থেকেই এই স্থাপনা নিয়ে নানা ধরনের গবেষণার সূত্রপাত। জানা গেছে, তাজমহল দিন দিন বিবর্ণ হচ্ছে। গত ৩৫ বছরে অবস্থা খারাপ বৈ ভালো হয়নি। সমস্যার প্রকৃতি ও উদ্ভবের কারণ নাটকীয়ভাবে বদলে গেছে। স্থপতি এ জি কৃষ্ণ মেননের মতে, তাজমহলের সমস্যা বেশ জটিল। তবে রোমের সিস্টাইন চ্যাপেল বা মিসরের পিরামিডও একই সমস্যার মুখোমুখি হয়েছে। তাই পরবর্তী প্রজন্মের কাছে তাজমহলকে পৌঁছে দিতে পুরো বিশ্বের সহায়তা প্রয়োজন ভারতের।
সমস্যা কী কী?
বিশেষজ্ঞদের মতে, পরিবেশদূষণের কারণেই তাজমহল আজ হুমকিতে। তবে এই পরিবেশদূষণ নানামাত্রিক। একটির চেয়ে আরেকটি বেশি ভয়ংকর।
ভারতীয় সাময়িকী ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তাজমহল যে যমুনা নদীর তীরে গড়ে তোলা হয়েছে, সেই নদীতে পানির পরিমাণ কমে গেছে। মুঘল আমলে স্থপতিরা কখনোই ভাবেননি, যমুনায় পানির প্রবাহ কমে যেতে পারে। এই ভাবনা মাথায় রেখে তাজমহলের স্থাপত্যে কোনো বদল আনা হয়নি। এখন তার ফলাফল নিয়ে দুশ্চিন্তা দেখা দিয়েছে।
তাজমহলের চারপাশে ১০-১২ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে রয়েছে আটটি ঘাট।
যমুনা নদীর তীরে গড়ে ওঠা এসব ঘাটে স্থানীয় অধিবাসীরা গোসল থেকে শুরু করে ধর্মীয় আচার—সবই করে থাকে। এ ছাড়া তাজমহল ও আগ্রা দুর্গের মধ্যে আছে শ্মশান। আবার ঘাটে মৃতদেহের সৎকারও করা হয়। এসব থেকে হয় কার্বন নিঃসরণ। সেটিও কমিয়ে দিচ্ছে তাজমহলের আয়ু। তবে বছর খানেক আগেই ভারতের সর্বোচ্চ আদালত এই শ্মশানঘাট সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দিয়েছিলেন। তবে তা আর বাস্তবায়িত হয়নি। ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রতিদিন ঘাটগুলোয় প্রায় ১০০ মৃতদেহের সৎকার হয়। প্রতি সৎকারে প্রয়োজন হয় ৩০০ কেজি কাঠ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তাজমহলে প্রভাব ফেলছে সুদূর রাজস্থানের মরুভূমি থেকে আসা ধুলা। আবার যমুনার তীরে অবৈধ বালু উত্তোলন চলছে। যমুনার পানিতে ভাসছে বর্জ্য পদার্থ ও প্লাস্টিক পণ্য। প্লাস্টিক বর্জ্য তৈরিতে অবদান আছে আগ্রার অধিবাসী ও পর্যটকদেরও। শুধু আগ্রা শহরেই প্রতি মাসে ১৮০ টন প্লাস্টিক বর্জ্য তৈরি হয়।
গবেষকেরা বলছেন, এই প্লাস্টিক বর্জ্য তৈরি করে মিথেন গ্যাস, যা তাজমহলের মার্বেলকে হলুদাভ করে দিচ্ছে।
নতুন গবেষণায় দেখা গেছে, বাতাসে থাকা কার্বন তাজমহলের মার্বেলের রং বদলে দিচ্ছে। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস পত্রিকা বলছে, আগ্রা বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের তালিকায় অষ্টম স্থানে রয়েছে। ২০১৫ সালে ভারতের সংসদে উপস্থাপিত সরকারি পর্যালোচনায় জানানো হয়, আগ্রার বায়ুদূষণ তাজমহলের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলছে। একই সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত করছে সাধারণ মানুষের জীবন। এই পর্যালোচনায় আরও বলা হয়, নিরীক্ষা ছাড়াই তাজমহলের আশপাশে গড়ে উঠছে নানা ধরনের স্থাপনা। এতেও তাজমহলে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।
টাইমস অব ইন্ডিয়া লিখেছে, ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের চালানো যৌথ গবেষণায় দেখা গেছে, এই বায়ুদূষণের কারণেই তাজমহলের সাদা রঙের মার্বেলে বাদামি ও হলুদ ছোপ পড়ছে।
তাজমহলের জন্য আরেক বিপদ এটি দেখতে আসা পর্যটকেরা। মূলত পর্যটকদের টিকিট বাবদ পাওয়া অর্থ দিয়েই তাজমহলের রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়নকাজ করা হয়।
ইন্ডিয়া টুডে জানাচ্ছে, প্রতিদিন প্রায় ৪০ হাজার পর্যটক তাজমহল দেখতে আসেন। ছুটির দিনগুলোয় এই সংখ্যা দাঁড়ায় ৭০ হাজার পর্যন্ত। অথচ ভারতের ন্যাশনাল এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং রিসার্চ ইনস্টিটিউটের দেওয়া প্রতিবেদন অনুযায়ী, পুরো তাজমহলে পর্যটকের সংখ্যা কখনোই ১০ হাজারের বেশি হতে পারবে না।
মূল সমাধিস্থলের কাছাকাছি পর্যন্ত যেতে পারেন পর্যটকেরা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পর্যটকদের ভিড়ে মূল সমাধিস্থলটি আরও ভঙ্গুর হয়ে পড়ছে। মানুষের অত্যধিক ভিড়ের কারণে নোংরা হচ্ছে তাজমহলের মার্বেল, নষ্ট হচ্ছে সৌন্দর্য। আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তাজমহল থেকে প্রতিদিন প্রায় ১২ থেকে ২০ হাজার প্লাস্টিকের বোতল সরাতে হয়। এই বোতলগুলো পর্যটকদেরই অবদান!
যমুনা মরলে তাজমহলও শেষ?
তাজমহল যখন নির্মাণ করা হয়েছিল, তখন সম্রাট শাহজাহান নিশ্চয়ই ভাবেননি যমুনা নদীর পানিতে কোনো দিন বর্জ্য ভাসবে! তবে কবিগুরু বলে গেছেন, ‘এ কথা জানিতে তুমি ভারত-ঈশ্বর শা-জাহান, কালস্রোতে ভেসে যায় জীবন যৌবন ধনমান।…’
ঠিক তেমনই হয়েছে। হিমালয় পর্বতমালার যমুনোত্রী হিমবাহ থেকে যমুনার উৎপত্তি। উৎপত্তিস্থলে যমুনার পানি স্বচ্ছ, টলটলে। অথচ হরিয়ানার হাথি কুণ্ড বাঁধ পার হওয়ার পরই নোংরা হতে থাকে যমুনার পানি। এই বাঁধে যমুনার মোট পানিপ্রবাহের ৯০ শতাংশের বেশি আটকে যায়। পানিপথ ও আগ্রার মাঝে রয়েছে অসংখ্য নর্দমা বা ড্রেন। এগুলো যমুনার পানিতে মেশায় দূষিত পানি। দিল্লিতে গিয়ে যমুনা আরও দূষিত হয়ে পড়ে। পয়োনিষ্কাশনের প্রায় ১৭টি ড্রেন যমুনায় উচ্ছিষ্ট ফেলে। আর আগ্রায় সেই ড্রেনের সংখ্যা দাঁড়ায় ৯০-এ।
ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নদীর তীর ঘেঁষে গড়ে ওঠা মানববসতি, অবৈধ স্থাপনা, কলকারখানা—কেউই ছাড় দেয় না যমুনাকে।
গ্যাংটকের সিকিম ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক অনিল কুমার মিশ্র বলেন, তাজমহলের পাশ দিয়ে যখন যমুনা বয়ে যায়, তখন এর সঙ্গে নর্দমার কোনো তফাত থাকে না।
আগ্রার সেইন্ট জনস কলেজের পতঙ্গবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক গিরিশ মহেশ্বরী বলছেন, যমুনা নদীর পানির প্রকৃতি পরিবর্তন হয়ে যাওয়ায় সেখানকার পানিতে তৈরি শৈবাল তাজের মার্বেলে বাসা বাঁধছে। এটিই সাদা মার্বেলকে সবুজাভ বানানোর কারণ। এভাবে চলতে থাকলে তাজমহল পুরোপুরি সবুজ রঙের হয়ে যেতে পারে। আবার যমুনার দূষিত পানিতেই জন্ম নিচ্ছে নানা ধরনের কীটপতঙ্গ, যা তাজমহলে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে।
অন্যদিকে, তাজমহলের ভিত নিয়েও আছে সমস্যা।
তাজমহলের ভিত ঠিক কীভাবে তৈরি—সেই সম্পর্কে স্পষ্ট ও নিখুঁত তথ্য পাওয়া যায় না। বিভিন্ন নথিতে দেখা গেছে, তাজমহলের ভিত অনেকটা কাঠের বাক্সের মতো। পেশায় পুরপ্রকৌশলী ও তাজমহল নিয়ে গবেষণা চালানো অধ্যাপক এস সি হান্দা বলেন, কংক্রিট, চুন, পাথর প্রভৃতি উপাদান দিয়ে তাজের ভিত তৈরি করা হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। যমুনা নদীর অববাহিকা পর্যন্ত গেছে এই স্থাপনার ভিত। কিন্তু নদীতে পানিপ্রবাহ কমে যাওয়ায় এই ভিত ভঙ্গুর হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এতে করে মূল সমাধিস্তম্ভ মাটিতে দেবে যেতে পারে।
অবশ্য তাজমহলের ভিত ক্ষয়ে যাওয়া নিয়ে বিতর্ক আছে।
আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া ও সেন্ট্রাল বিল্ডিংস রিসার্চ ইনস্টিটিউট বলছে, তাজমহলের ভিত নিয়ে এসব আশঙ্কা অমূলক।
কিসে রক্ষা?
ভারতের সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্ট সেই ১৯৮৪ সাল থেকেই তাজমহলের সংরক্ষণের বিষয়ে নানা ধরনের নির্দেশনা দিয়ে আসছেন। সেই অনুযায়ী বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করছে সরকার। অবশ্য আদালতের পর্যবেক্ষণ, সরকারি রক্ষণাবেক্ষণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো যথাযথ দায়িত্ব পালন করছে না।
ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদনে তাজমহল রক্ষার জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে—
১. তাজের রক্ষণাবেক্ষণে আরও মানুষ ও অর্থ বরাদ্দ করা। তিন বছর ধরে টিকিট বিক্রি করে তাজমহল যা আয় করছে, তার মাত্র ৮ শতাংশ এই স্থাপনার রক্ষণাবেক্ষণে ব্যয় করা হচ্ছে। এই খরচ বাড়ানো প্রয়োজন।
২. এই ঐতিহাসিক স্থাপনার কাছাকাছি থাকা শ্মশান ও ডিজেল জেনারেটর অন্যত্র সরাতে হবে।
৩. যমুনার তীরে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা ভেঙে ফেলতে হবে এবং এর তীরবর্তী বিভিন্ন শহরের পয়োনিষ্কাশনব্যবস্থা উন্নত করতে হবে। শহরের বর্জ্যে যমুনার পানি যেন দূষিত না হয়, সে জন্য শক্ত পদক্ষেপ নিতে হবে। নদীর তীরে অবৈধ বালু উত্তোলনও বন্ধ করতে হবে।
৪. আগ্রা শহরে যেন প্রকাশ্যে বর্জ্য পদার্থ পোড়ানো না হয়, সেদিকে নজর দিতে হবে।
৫. নিয়মিত যমুনা নদীর পানির মান পরীক্ষা করতে হবে। নদীর পানি বিশুদ্ধ করার জন্য স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তি ব্যবহার করা প্রয়োজন।
৬. তাজমহলের ভিত নিয়ে একটি আন্তর্জাতিক মানের সমীক্ষা চালাতে হবে।
৭. তাজমহলে পর্যটকদের প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। প্রতিদিনের জন্য পর্যটকের সংখ্যা নির্দিষ্ট ও সীমিত করতে হবে।
টিকবে তাজমহল?
তাজমহল ও এখানে ঘুরতে আসা পর্যটকদের ওপর নির্ভর করে আগ্রার স্থানীয় অর্থনীতিও। তাজমহলের জন্যই শহরের বিভিন্ন প্রান্তে ও তাজের আশপাশে গড়ে উঠেছে নানা হোটেল, দোকান, শপিং মল ইত্যাদি। হাজার হাজার মানুষ এই পর্যটনকেন্দ্রিক অর্থনীতির সঙ্গে যুক্ত। তাই তাজমহল না টিকলে আগ্রার মানুষের জন্য তা হবে সবচেয়ে বড় দুঃসংবাদ।
১৬৫২ সালে নির্মাণের মাত্র চার বছর পরই তাজমহলের সংস্কার করতে হয়েছিল মুঘল শাসকদের। পরে মুঘলদের দোর্দণ্ড প্রতাপ যত ম্রিয়মাণ হলো, ততই বিবর্ণ হলো তাজ। নাদির শাহের সেনা, ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বেনিয়া, ব্রিটিশ শাসন—সব আমলেই তাজমহলের বিভিন্ন সম্পদ লুণ্ঠন করা হয়। শুরুতে তাজমহলের দরজা ছিল রুপার, ছিল সোনার তৈরি রেলিং, রত্নখচিত ঝাড়বাতি ও মহামূল্যবান কার্পেট—সবই গেছে ভিনদেশি শাসকদের হাতে।
রয়ে গেছে শুধু তাজমহলের অপরূপ স্থাপত্য। এবার সেটিও ধ্বংস হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ১২টি প্রজন্ম ধরে টিকে আছে তাজমহল। কিন্তু আগামী ১২ প্রজন্ম এটি টিকে থাকবে কি? সময়েই মিলবে উত্তর।