চিলাহাটি ওয়েব,ঢাকা অফিস : দীর্ঘ পাঁচ বছর পরিত্যক্ত অবস্থায় থাকার পর সিলেটের বিয়ানীবাজার গ্যাসক্ষেত্রের পরিত্যক্ত ১ নম্বর কূপ থেকে গ্যাস সরবরাহ শুরু হচ্ছে।
আজ সোমবার (২৮ নভেম্বর) সকাল থেকে জাতীয় সঞ্চালন লাইনে গ্যাস সরবরাহ শুরু হবে।
সিলেট গ্যাস ফিল্ড লিমিটেডের (এসজিএফএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো: মিজানুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, গ্যাসের চাপ পরীক্ষার (টেস্টিং) কাজ শেষে চূড়ান্ত পর্যায়ে জাতীয় গ্রিডে গ্যাস সরবরাহের জন্য কারিগরি সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। রবিবার দিবাগত রাত ১২টার পর থেকে জাতীয় সঞ্চালন লাইনে গ্যাস সরবরাহ করা যাবে। তবে বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের চূড়ান্ত অনুমোদন পাওয়াসাপেক্ষে সোমবার সকাল থেকে জাতীয় গ্রিডে গ্যাস সরবরাহ শুরু হবে। এ কূপ থেকে দৈনিক ৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় সঞ্চালন লাইনে সরবরাহ করা যাবে বলে জানান তিনি। সিলেটের বিয়ানীবাজার গ্যাসক্ষেত্রের ২ নম্বর কূপ থেকে বর্তমানে দৈনিক ৭ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় সঞ্চালন লাইনে সরবরাহ হচ্ছে।
বিয়ানীবাজার গ্যাস কূপের উপ-মহা ব্যবস্থাপক (ডিজিএম) ও প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী আব্দুল জলিল প্রামাণিক বলেন, রবিবার রাতে জাতীয় সঞ্চালন লাইনে পরীক্ষামূলকভাবে কিছু গ্যাস সরবরাহ করা হবে। সব কিছু ঠিক থাকলে সোমবার থেকে জাতীয় সঞ্চালন লাইনে গ্যাস সরবরাহ শুরু হবে। তবে ঠিক কখন শুরু হবে, তা নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না।
তিনি আরো বলেন, সিটি টেস্টিংয়ের জন্য আমরা কাজ করছি। ফুয়েল কম্বিনেশন (পিকআপ বা চাপ) প্রক্রিয়া ঠিক করে আমরা গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করবো। প্রতিদিন ৭ থেকে ৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় সঞ্চালন লাইনে সরবরাহ করা যাবে।
বিয়ানীবাজার গ্যাস ফিল্ডের ১ নম্বর কূপ থেকে ১৯৯১ সালে গ্যাস তোলা শুরু হয়। ২০১৪ সালে তা বন্ধ হয়ে যায়। এরপর ২০১৬ সালে ফের উত্তোলন শুরু হলে ওই বছরের শেষ দিকে আবারও তা বন্ধ হয়ে যায়।
২০১৭ সালের শুরু থেকেই কূপটি পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল। এরপর বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন (বাপেক্স) ওই কূপে অনুসন্ধান কাজ চালিয়ে গ্যাসের মজুত পায়।
এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১০ সেপ্টেম্বর ওই কূপে নতুন করে পুনঃখনন কাজ (ওয়ার্ক ওভার) শুরু হয়।
কূপে গ্যাস প্রাপ্তি নিশ্চিতের পর গত ১০ নভেম্বর থেকে গ্যাসের চাপ পরীক্ষা শেষে কূপ থেকে দ্রুত জাতীয় সঞ্চালন লাইনে গ্যাস দেওয়ার জন্য প্রস্তুত করা হয়। বর্তমানে কূপের ৩ হাজার ২৫৪ মিটার গভীরে ৭০ বিলিয়ন ঘনফুটের বেশি গ্যাস মজুত আছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, গ্যাসের চাপ পরীক্ষার পর দেখা গেছে, কূপটি দৈনিক ১০ থেকে ১২ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করতে সক্ষম। তবে কারিগরি বিভিন্ন দিক বিবেচনা করে দৈনিক ৭০ থেকে ৮০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হবে। এতে দৈনিক ১২৫ থেকে ১৩০ ব্যারেল কনডেন্স গ্যাসও পাওয়া যাবে।